Baghbazar Fire

দমকলের গাড়ি ভাঙচুর মাত্রা বাড়ায় বিপদের

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দমকল জানিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৫০ নাগাদ তাদের কাছে অগ্নিকাণ্ডের খবর আসে।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৩৪
Share:

ফাইল চিত্র

বাগবাজারের হাজার বস্তিতে বুধবার রাতে আগুন নিয়ন্ত্রণে দমকলের তরফে কি কোনও গাফিলতি ছিল? ঘটনার পর থেকে ঘুরপাক খাচ্ছে এই প্রশ্নটাই। অভিযোগ, আগুনের খবর পাওয়া মাত্র চারটি ইঞ্জিন পৌঁছে গেলেও পরে দফায় দফায় যে আরও ইঞ্জিন আসে, সেগুলি এসেছে প্রায় আধ ঘণ্টা দেরিতে। দেরিতে আসার অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দারা দমকলকর্মীদের উপরে চড়াও হন। ভাঙচুর চালানো হয় তাঁদের গাড়িতে। এমনকি, দমকলকর্মীদের হোসপাইপ কেড়ে স্থানীয় বস্তিবাসীরাই আগুনে জল দিতে শুরু করেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে অন্য যে বিষয়টি উঠে আসছে তা হল, দমকলের গাড়িতে ভাঙচুর চালানো মানে তো তাঁদের কাজে বাধা দেওয়া। যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা তো দূর, উল্টে বিপদের মাত্রাকেই আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

Advertisement

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দমকল জানিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৫০ নাগাদ তাদের কাছে অগ্নিকাণ্ডের খবর আসে। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে উত্তর ডিভিশনের অফিসে ফোন পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে কাশীপুর দমকলকেন্দ্র থেকে রওনা দেয় দু’টি ইঞ্জিন।

পাশাপাশি নিমতলা ও চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের দমকলকেন্দ্র থেকেও একটি করে গাড়ি বাগবাজারের দিকে রওনা হয়।

Advertisement

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, বিশাল বস্তিতে আগুন লাগার খবর পেয়ে শুরুতে মাত্র চারটি গাড়ি কেন পাঠানো হল? বুধবার রাতের আগুন নেভাতে কাজ করেছে মোট ২৬টি ইঞ্জিন। হাজার বস্তির বাসিন্দাদের বড় অংশের বক্তব্য, আগুন লাগার শুরুতেই পর্যাপ্ত সংখ্যক দমকলের ইঞ্জিন এলে হয়তো এত বড় দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। দমকলের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ এনে সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী শশী পাঁজা, সাধন পাণ্ডেকে ঘিরে বিক্ষোভও দেখায় উত্তেজিত জনতা। বিক্ষোভের আঁচ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ফিরে যান তাঁরা।

বৃহস্পতিবার গঙ্গাসাগরে ছিলেন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। দমকল দেরিতে আসার অভিযোগ মেনে নিয়ে তিনি সেখান থেকে ফোনে বলেন, ‘‘বুধবার সব অফিস খোলা ছিল। সন্ধ্যায় রাস্তায় খুব যানজট ছিল। তা ছাড়া ছিল মিছিল। কাছাকাছি কাশীপুর দমকলকেন্দ্র থাকলেও যানজটের জন্য দমকলের পৌঁছতে একটু দেরি হয়েছে।’’ মন্ত্রীর দাবি, ‘‘গঙ্গাপাড়ে উত্তুরে হাওয়ার দাপটে আগুন দ্রুত ছড়ায়। ২৬টি ইঞ্জিনের তৎপরতায় রাত ১০টা নাগাদ তা আয়ত্তে আসে।’’

তবে একই সঙ্গে স্থানীয়েরা যে ভাবে দমকলের গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছেন, তাতে ভীষণ ক্ষুব্ধ মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘এমন বিপদের সময়ে দমকলের উপরে ভরসা রাখা দরকার।’’ অভিযোগ,

অপ্রশিক্ষিত বাসিন্দাদের হাতে হোসপাইপ পড়ায় মাঝেমধ্যেই উল্টো দিকে রাস্তায় জল এসে পড়েছে। আগুনের জায়গায় যেখানে জল দেওয়ার কথা, সেখানে জল দেওয়া যায়নি। দমকলের এক আধিকারিকের অভিযোগ,

‘‘বিপদের সময়ে মাথা ঠান্ডা রাখা জরুরি। কিন্তু প্রথম থেকেই বস্তিবাসীরা যে ভাবে উত্তেজিত হয়ে ছিলেন, তাতে আগুন নেভাতে আমাদের যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে।’’ দমকলের ডিজি জগমোহন বলেন, ‘‘গঙ্গার ধারে প্রবল বেগে উত্তুরে হাওয়া দিচ্ছিল। পাশাপাশি, গ্যাস সিলিন্ডার ফেটেও আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। খবর পাওয়া মাত্রই দমকলের গাড়ি রওনা দিয়েছিল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement