নিজস্ব চিত্র
রবিবার ক্যামাক স্ট্রিটের তৃণমূল অফিস থেকে সাংবাদিক বৈঠক করলেন বাবুল সুপ্রিয়। সাংবাদিক বৈঠকে বাবুলের পাশে ছিলেন সাংসদ ডেরেক ‘ও ব্রায়েন, ও সাংসদ সৌগত রায়। বৈঠকের শুরুতেই বাবুল ধন্যবাদ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ‘‘আমাকে প্রথম একাদশে সুযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ’’, বললেন তিনি। স্পষ্ট করে বললেন, ‘‘খেলার সুযোগ না পেয়ে আমি বিজেপি ছেড়েছি। আমি সবসময় প্রথম একাদশেই থাকতে চাই। সেই কারণে আমি বলব, আমায় প্রথম একাদশে রাখার জন্য দিদি ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানাই।’’
সবচেয়ে জনপ্রিয় মানুষকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই তালিকার শীর্ষে থাকবেন, সেটা আলাদা করে বলে দিতে হবে না। তাই তাঁকেই আমি তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চাই। ২০১৪ সালে মোদী ছিলেন আশা, ২০২৪ সালে এগিয়ে রয়েছেন দিদি।
অনুপম হাজরার প্রশ্নের জবাব দেব কেন? কটূ কথা বলে জনপ্রিয়তা পাচ্ছেন অনুপম হাজরা। দয়া করে বুঝুন, দিদি আমাকে ঝালমুড়ি অফার করেছিলেন। কেন করেছিলেন? বলছি। প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন কলকাতায়। তখন প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি বেরিয়ে যাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি এসেছিল। রাজভবনে যাওয়ার পথে উনি আমাকে গাড়িতে বসতে বলেন। উনি যাওয়ার পথে ভিক্টোরিয়ার সামনে আমাকে ঝালমুড়ি খাওয়ার কথা বলেছিলেন, আমি কেন খাব না? যদি কাজ করার জন্য বিজেপি-র মন্ত্রীর সঙ্গে ঝালমুড়ি খেতে হয়, তাহলেও খাব।
একটা দলের আদর্শ হওয়া উচিত, মানুষের হয়ে কাজ করা। দিলীপ ঘোষকে সমালোচনা করলেন বাবুল। তাঁর বক্তব্যের সমালোচনায় বাবুল। বললেন, ‘‘ যাঁরা আমাকে পর্যটক বলছেন, তাতে আমার বিশেষ কিছু আসে যায় না।’’ আমাকে কী দায়িত্ব দেওয়া হবে, তার উত্তর আমি দিতে পারব না, উত্তর দল দেবে। আমার কোনও পোস্ট যদি বিড়ম্বনায় ফেলে, তাহলেও আমি সরব না। তবে আপনারা যদি জানতে পারেন, আমাকে জানাবেন, আমি চুপচাপ ডিলিট করে দেব।
প্রিয়ঙ্কা তিবরেওয়ালকে নিয়ে প্রশ্নের জবাব দিলেন বাবুল। বললেন, প্রিয়ঙ্কা লড়াকু মেয়ে। আমাকে বিড়ম্বনায় না ফেলতে বলব দলকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য বাবুল সুপ্রিয়র কোনও প্রয়োজন নেই। আমার তৃণমূল স্তরে যে যোগাযোগ আছে, তা অনেকেরই নেই। তবে অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই, আমি বিজেপি-র কর্মী ছিলাম। যে দলের লোক ছিলাম, সে দলের হয়েই বলতাম।
শুভেন্দু অধিকারীর এটা অধিকার, যে উনি আমার সমালোচনা করবেন। শমীক ভট্টাচার্যও সমালোচনা করেছেন। এখানে বহিরাগত নিয়ে প্রশ্ন করার মানে হয় না। মূল বিষয়টা হচ্ছে, আমি যে দলে যাচ্ছি আমি সেখানে সেরাটা দিচ্ছি। একটা স্পষ্ট বিষয়, আমি লড়তে পারছি কি না। আমি আজ তথাগত রায়ের কথা নিয়ে লিখেছি। স্বপন দাশগুপ্তকে নিয়েও লিখেছি। আমার কাছে যে সুযোগ এসেছে, তাতে এতটাই শক্তি আছে যে সমস্ত সমালোচনার মুখেও আমি কাজ করব।
আমি বাংলার জন্য অনেক কাজ করেছি। আগেও করেছি, এখনও করব। আমার মনে হয় বিজেপি-কে নিয়ে কী সমস্যা ছিল, তা আমি স্পষ্ট করে আগেও লিখেছি। আমি আসানসোলের আসন ছেড়ে দেব, সাংসদ পদে থাকব না। বুধবার স্পিকারের সঙ্গে দেখা হলে সাংসদ পদ ছাড়ব ওই দিনই। আসানসোলে যেমন রাস্তায় বসে চা খেয়েছি, তেমনই এক্ষেত্রেও করব। আমাকে দলের হয়ে কাজ করতে হবে। শিখতে হবে। আমি সৌগত দা-কে বলছি, তৃণমূলের সংগঠন নিয়ে কথা বলতে, আমাকে সাহায্য করতে। খেলার সুযোগ না পেয়ে বিজেপি ছেড়েছি।
নিজস্ব চিত্র
কবীর সুমনের প্রতিক্রিয়া নিয়ে উত্তর দিতে চাইলেন না বাবুল সুপ্রিয়। ফেসবুক, টুইটার আমার মোবাইলে নেই, আমি এ সবের উত্তর দেব না।
আমি অনেকদিন ধরে বাবুলকে চিনি। ওঁর গান শুনেছি। আমি বাবুলের গুণমুগ্ধ। বাবুলের আসা আমাদের শক্তি বাড়িয়ে দেবে। আমাদের কর্মীরা খুব উৎসাহিত। বাবুলের গ্রহণযোগ্যতা আছে বাঙালির কাছে। বাবুল আসায় আমরা লাভবান হয়েছি। সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হওয়ার কথা আছে বাবুলের।
আমি রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে গিয়েছিলাম। আমার ওখানে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে গিয়েছিলাম। জনতার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছিলাম। আমাকে আবার জনতার মধ্যে ফেরার সুযোগ দিয়েছেন মমতাদিদি, অভিষেক। বাংলার মানুষের হয়ে কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন। আমি জানি আমার বিরুদ্ধে ঠিক কী কী বলা হবে। আমাকে এমন কোনও কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তা নিশ্চয়ই এমন বড় কিছু যার জন্য আমাকে ভাবতে হয়েছে।
চারদিনের ঘটনা এটি। খুবই উৎসাহ পেয়েছি। তৃণমূলে যোগদানের অনুঘটক ডেরেক। আমি প্রথম একাদশে থাকতে চাই, বললেন বাবুল। আমি তৃণমূলের কাছ থেকে অনেক ভালবাসা পেয়েছি যে দলের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভাল ছিল না, সেখান থেকে আমি অনেক ভালবাসা পেলাম। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মমতাদিদি আমাকে কাছে টেনে নিয়েছেন।