হামলায় জখম মহম্মদ জাভেদ। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।
এক যুবককে কুপিয়ে খুনের চেষ্টা এবং শেষে গুলি ছুড়ে চম্পট দেওয়ার অভিযোগ দায়ের হল আর এক যুবক ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাত দেড়টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে কড়েয়া থানা এলাকার পাম অ্যাভিনিউয়ে। আহতকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে চিকিৎসার পরে বুধবার সকালে তাঁকে ছাড়া হয়। তাঁর শরীরের বেশ কয়েকটি জায়গায় সেলাই পড়েছে। লালবাজার সূত্রের খবর, পুরনো বিবাদের জেরেই এই ঘটনা। খুনের চেষ্টার ধারার পাশাপাশি পাঁচ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু হয়েছে। তবে বুধবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, পাম অ্যাভিনিউয়ের একটি বহুতলের বাসিন্দা মহম্মদ জাভেদ মঙ্গলবার রাত দেড়টা নাগাদ রাস্তায় কয়েক জনের সঙ্গে বসে লুডো খেলছিলেন। সেই সময়ে দলবল নিয়ে হাজির হয় চিনা গব্বর নামে এক ব্যক্তি। জাভেদের অভিযোগ, গব্বর ও তার সঙ্গীরা তাঁকে বেধড়ক মারধর করে। চপার দিয়ে দু’পায়ে এবং হাতে কোপ মারে। সেই অবস্থায় জাভেদ পালাতে গেলে তাঁর পিঠেও চপার চালানো হয়। এলাকার লোকজন জড়ো হতে শুরু করলে এর পরে শূন্যে গুলি ছুড়ে পালায় গব্বর ও তার দলবল।
স্থানীয়েরাই জাভেদকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর পায়ে এবং কনুইয়ে সেলাই পড়ে। জাভেদের হাতের একটি আঙুলও কেটে ঝুলছিল। ঘটনার পরে ওই রাস্তায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। কড়েয়া থানার পাশাপাশি লালবাজারের বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় চলছে পুলিশি নজরদারি। ঘটনাস্থলের কাছেই ফুটপাতে এবং একটি দোকানের গায়ে তখনও রক্তের দাগ।
আহত জাভেদ জানান, তিনি গাড়িচালক হিসেবে কাজ করলেও এলাকার কয়েকটি বাড়ির নির্মাণের সঙ্গেও যুক্ত। সে কাজে যুক্ত গব্বরও। জাভেদের দাবি, একটি নির্মীয়মাণ বাড়ি বিক্রি করে আসা টাকার মধ্যে থেকে দেড় লক্ষ টাকা তাঁর পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই টাকা তাঁকে দিচ্ছিল না গব্বর। এ নিয়ে গব্বরের সঙ্গে মাস দেড়েক আগে হাতাহাতিও হয় জাভেদের। তাঁর অভিযোগ, পুরনো সেই আক্রোশেই গব্বর ও তার সঙ্গীরা হামলা চালিয়েছে। জাভেদের আরও দাবি, ‘‘পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করে গব্বর। পুলিশ আধিকারিকদের নাম ভাঙিয়ে সে এলাকায় দাদাগিরি চালায়।’’
জাভেদের বাড়ির পাশেই একটি বাড়ির উপরের তলে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে থাকে গব্বর। তবে ঘটনার পর থেকে সে এলাকাছাড়া। এ দিন ওই বাড়িতে গেলে তার পরিবারের কারও দেখা মেলেনি। খোঁজ নেই গব্বরের সঙ্গী রাহুল, সাদ্দাম, ল্যাংড়া আদিল এবং লুলা জাহিদ নামে চার জনের। ঘটনা প্রসঙ্গে কড়েয়া থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘পুরনো বিবাদের জেরেই এই গন্ডগোল। রাতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে। অভিযুক্তেরা দ্রুত ধরা পড়বে।’’