বাসে সাঁটা সেই পোস্টার। —নিজস্ব চিত্র
যাত্রী ভাড়ার পাশাপাশি ক্রমশ চড়ছে ডিজ়েলের দামও। এ দিকে ভোটের আগে বাস ভাড়া বৃদ্ধির আশা না থাকায় যাত্রীদের থেকে তাই অনুদান হিসেবে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন বেসরকারি বাস-মিনিবাসের মালিকেরা। অনুদানের আর্জি জানিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রুটের বাসে পোস্টার দিয়েছেন বাসমালিকদের একাংশ।
২২১, ২১৭, ২২৩, ৭৯বি, ৪৫, ৯১, ৯৩, ২১১ এবং ৩০সি রুটের একাধিক বাসে ওই পোস্টার পড়েছে বলে খবর। সেই পোস্টারে বাস পরিষেবা অব্যাহত রাখতে যাত্রীদের থেকে ১০, ১২ বা ১৪ টাকা ‘অনুদান’ হিসেবে দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। চলতি মাস থেকেই ওই অতিরিক্ত ভাড়া অনুদান হিসেবে চাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রতি চার কিলোমিটারের জন্য ১০ টাকা, আট কিলোমিটারের জন্য ১২ টাকা এবং তার চেয়ে বেশি দূরত্বের জন্য ১৪ টাকা বাস ভাড়া চাইছেন বাসমালিকেরা।
যদিও যাত্রীদের অভিযোগ, বেসরকারি বাস সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া অনেক দিন ধরেই নিচ্ছে। সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম ভাড়া ৭, ৯ এবং ১১ টাকা হলেও প্রায় সব বাসেই বেশি ভাড়া দিচ্ছেন যাত্রীরা। ই এম বাইপাস-কেন্দ্রিক স্টেট ট্রান্সপোর্ট অথরিটির পারমিট আছে এমন সব বাসে ন্যূনতম ১০ টাকা ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। শহরের অন্যান্য রুটগুলিতে ভাড়া এখন গড়ে ৮-১০ টাকা। তাই ফের আরও এক দফা ভাড়া বৃদ্ধির পরিস্থিতি যাত্রীদের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। সেই সঙ্গে এ বিষয়ে সরকারি নজরদারির ঢিলেঢালা অবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
বাসমালিক সংগঠনগুলির অভিযোগ, লকডাউনের আগে লিটার প্রতি ডিজ়েলের দাম ছিল কমবেশি ৬৪ টাকা, বর্তমানে ৮৪ টাকা। ফলে অতিরিক্ত ভাড়া না নিয়ে উপায় নেই বলে দাবি তাঁদের। সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসের সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, ‘‘সবে যাত্রী বাড়তে শুরু করেছে। তার মধ্যেই ডিজ়েলের দাম আকাশছোঁয়া। বাধ্য হয়ে অনুদানের আর্জি জানাতে হচ্ছে।’’ অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্কুল-কলেজ পুরো না খোলায় এখনও দিনের বেশির ভাগ সময়ে যাত্রী কম থাকে। তার মধ্যে ডিজ়েলের দাম উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।’’ জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটসের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বর্তমানে পথে নামছে অর্ধেক বাস। ফলে তাঁরাও বাড়তি ভাড়া অনুদান হিসেবে চাওয়ার পক্ষপাতী। তবে বাস মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু বলেন, ‘‘আমরা এখনই ওই পথে হাঁটছি না। তবে এ নিয়ে পথে নামার পরিকল্পনা করেছি।’’ পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা এ বিষয়ে সরাসরি মুখ খুলতে চাননি। তাঁদের কথায়, ‘‘বেশি ভাড়া নিয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’