ছবি প্রতীকী
নিজের দাদা দিনের পর দিন তাঁকে ধর্ষণ করেছে বলে আনন্দপুর থানায় আভিযোগ দায়ের করেও পিছিয়ে আসতে চেয়েছিলেন এক তরুণী। দাদার গ্রেফতারির পরে আদালতে চিঠি দিয়ে মামলা না এগোনোর কথা জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই আবেদন আদালতে গৃহীত হল না বৃহস্পতিবার। উল্টে ধৃতকে আরও এক দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর পাশাপাশি, নতুন করে বছর ছাব্বিশের অভিযোগকারিণীর গোপন জবানবন্দির দিন দিয়েছে আদালত। আজ, শুক্রবার আলিপুর আদালতে সেই গোপন জবানবন্দি দেওয়ার কথা।
গত সোমবার রাতে আনন্দপুরের বাসিন্দা, এক বেসরকারি বিমা সংস্থার ওই মহিলা কর্মী অভিযোগ করেন, গত জানুয়ারি থেকে একাধিক বার তাঁকে ধর্ষণ করেছে দাদা। পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বছর তিরিশের ওই যুবক চেন্নাইয়ে কর্মরত হলেও অতিমারিতে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ চলায় বাড়ি ফিরে এসে বোনের সঙ্গে থাকছিল। সেই সময়েই এমন ঘটনা ঘটে। তাঁদের বাবা-মা ২০১৬ সালে মারা গিয়েছেন। কয়েক জন দূর সম্পর্কের আত্মীয়কে তরুণী বিষয়টি জানালেও কেউ বিশ্বাস করেননি।
এর পরে অভিযুক্তের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখে টিটাগড় থেকে তাকে ধরে পুলিশ। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত জানায়, বোনের জীবনযাপন মেনে নিতে না পেরে সে আপত্তি জানিয়েছিল বলেই বোন তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। এর পরে ওই তরুণী আদালতে চিঠি দিয়ে মামলা এগোতে না চাওয়ার কথা জানান।
এ দিন আলিপুর আদালতে তরুণীর গোপন জবানবন্দি নেওয়ার কথা ছিল। সেই মতো সময় নির্ধারিত থাকলেও তিনি যাননি। এ দিন ধৃতকে আদালতে তোলা হলে তার পক্ষের আইনজীবী জামিনের আবেদন জানান। কারণ হিসেবে দাবি করেন, অভিযোগকারিণী নিজেই মামলা আর এগোতে চান না। সরকার পক্ষের আইনজীবী অবশ্য মামলাটির গুরুত্ব বুঝে এগোনোর আর্জি জানান। তরুণীর মামলা না এগোতে চাওয়ার পিছনে অন্য রকম চাপ থাকতে পারে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
দু’পক্ষের কথা শুনে জামিনের আবেদন খারিজ করেন বিচারক। ধৃতকে এক দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর পাশাপাশি বিচারক জানান, তরুণীর চিঠি তিনি এখনই গ্রহণ করছেন না। তরুণী গোপন জবানবন্দি দেওয়ার পরেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে পুলিশকে কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আনন্দপুর থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “তরুণীর গোপন জবানবন্দির পাশাপাশি তাঁর আত্মীয় এবং এক বন্ধুর বক্তব্য রেকর্ড করাও গুরুত্বপূর্ণ। এ বার সেটাই করা হবে।”