Garden Reach Building Collapse

গার্ডেনরিচকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১, উদ্ধার হল ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া ‘শেরু চাচা’র নিথর দেহ

গভীর রাতে তল্লাশি অভিযান চালানোর সময় আরও একটি দেহ উদ্ধার করেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যেরা। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত গার্ডেনরিচকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা ছিল ১০।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৪ ০৮:৪০
Share:

নিহত ‘শেরু চাচা’ (বাঁ দিকে)। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে উদ্ধারকাজ চলছে গার্ডেনরিচে। ছবি: সংগৃহীত।

কলকাতার গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১১। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তল্লাশি অভিযান চালানোর সময় আরও একটি দেহ উদ্ধার করেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যেরা। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত গার্ডেনরিচকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা ছিল ১০। বৃহস্পতিবার রাত ২টো ৫০ মিনিট নাগাদ আবদুল রউফ নিজ়ামি ওরফে শেরু নিজ়ামের দেহ উদ্ধার করা হয়। এলাকায় তিনি পরিচিত ছিলেন ‘শেরু চাচা’ নামেই। বছর পঁয়তাল্লিশের শেরুর দেহ এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর ছেলেরা দেহ শনাক্ত করেন।

Advertisement

গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ার পরেই ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে যান শেরু। দুর্ঘটনার পর খোঁজ-খোঁজ রব উঠলে শেরুর মোবাইলে ফোন করেন স্থানীয়দের কেউ কেউ। ফোন ধরে জবাবও দেন তিনি। ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকেই শেরু ফোনে বলেছিলেন, ‘‘আমি বেঁচে আছি। আমার সঙ্গে আরও কয়েক জন আটকে। তাড়াতাড়ি বার করো।’’ এর পরেই ফোন বন্ধ হয়ে যায় তাঁর। অন্য দিকে, বৃহস্পতিবারই পুলিশের তরফে জানানো হয়েছিল যে, উদ্ধারকাজ প্রায় শেষের পথে। তবে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলবে। সেই ধ্বংসস্তূপ সরাতে গিয়েই শুক্রবার ভোরে আরও একটি দেহ উদ্ধার করা হয়।

শেরু যে বেঁচে নেই, তা প্রায় ধরে নিয়েছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্যেরাও। শেরুর দাদা সফি আখতার সম্প্রতি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “কালকে (গত সোমবার) পর্যন্ত ভাবছিলাম ভাইকে খুঁজে পাওয়া যাবে। বেঁচে ফিরতে পারবে সে। কিন্তু সেই আশা প্রায় নেই।”

Advertisement

রবিবার রাত প্রায় ১২টার সময় গার্ডেনরিচের ব্যানার্জিপাড়া এলাকায় আচমকা প্রচণ্ড শব্দ করে ভেঙে আশপাশের কয়েকটি ঝুপড়ির উপর ধসে পড়ে পাঁচ তলার নির্মীয়মাণ বহুতল। ঘটনাস্থল থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বেই বাড়ি শেরু নিজ়ামের। স্থানীয়দের দাবি, শেরু ওই বহুতলের প্রোমোটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। যদিও তাঁর পরিবারের লোকেরা দাবি করেন, তিনি ওই বহুতলটিতে বিদ্যুতের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, প্রায় প্রতি দিন রাতেই ওই নির্মীয়মাণ বহুতলের কাছে যেতেন তিনি। আড্ডা দিতেন। পরে আবার বাড়ি ফিরে আসতেন। রবিবার রাতেও ওই নির্মীয়মাণ বহুতলের কাছে গিয়েছিলেন শেরু।

শেরুর পরিবারে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী, ছেলে এবং চার মেয়ে। ছেলে কলেজপড়ুয়া। মেয়েদের দু’জনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। সকলেই ক্ষীণ আশা নিয়ে ছিলেন অপেক্ষায়। যদি অলৌকিক কিছু ঘটে। কিন্তু শুক্রবার তাঁদের আশাভঙ্গ হল। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হল শেরুর নিথর দেহ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement