Stray Dogs

পথকুকুর ধরতে পুরসভার কর্মীদের কৌশল নিয়েই প্রশ্ন পশুপ্রেমীদের

পশুদের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, যথাযথ প্রশিক্ষণ ছাড়াই ডগ স্কোয়াডের কর্মীরা পথকুকুর ধরার কাজ করেন। জাল ছাড়া শুধু লাঠি নিয়ে কুকুর ধরায় আপত্তি জানিয়েছেন পশুপ্রেমীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:২৩
Share:

জাল ছাড়া শুধু লাঠি নিয়ে কুকুর ধরায় আপত্তি জানিয়েছেন পশুপ্রেমীরা। —ফাইল চিত্র।

পথকুকুরদের টিকাকরণ ও নির্বীজকরণের কাজ করে থাকে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের অধীন ডগ স্কোয়াড। সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মীরা ওই কুকুরদের ধরে গাড়িতে তুলে ধাপা বা এন্টালির ডগ স্কোয়াডে নিয়ে যান। কিন্তু অভিযোগ উঠছে ওই কর্মীরা যে পদ্ধতিতে কুকুর ধরার কাজ করছেন তা নিয়ে। পশুদের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, যথাযথ প্রশিক্ষণ ছাড়াই ডগ স্কোয়াডের কর্মীরা পথকুকুর ধরার কাজ করেন। জাল ছাড়া শুধু লাঠি নিয়ে কুকুর ধরায় আপত্তি জানিয়েছেন পশুপ্রেমীরা।

Advertisement

উত্তর কলকাতার কাশীপুরের একটি আবাসনের বাসিন্দাদের থেকে এলাকায় কুকুরের দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ার খবর এসেছিল। মাসখানেক আগে অভিযোগ পেয়ে পথকুকুর ধরতে পুরসভার ডগ স্কোয়াডের কর্মীরা ওই এলাকায় যান। কিন্তু অভিযোগ, টানা দু’ঘণ্টা ধরে ছোটাছুটি করেও তিনটির মধ্যে মাত্র একটিকে ধরতে পেরেছিলেন তাঁরা। কলকাতা পুরসভার বিজেপি পুরপ্রতিনিধি মীনাদেবী পুরোহিতের অভিযোগ, ‘‘পুরসভা দাবি করছে, শহরের পথকুকুরদের নির্বীজকরণ, টিকাকরণ পদ্ধতি ঠিক মতো হচ্ছে। কিন্তু আমার ওয়ার্ডে (২২) বড়বাজারের বিভিন্ন এলাকায় পথকুকুরের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। প্রচুর মানুষ কুকুরের কামড়ের শিকার হচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে মাস ছয়েক আগে পুর অধিবেশনে প্রশ্ন তুলেছিলাম। কাজ না হওয়ায় গত মাসেও পুর অধিবেশনে প্রশ্ন রেখেছিলাম।’’

মীনাদেবীর পাশের ওয়ার্ডের বিজেপির পুরপ্রতিনিধি বিজয় ওঝারও প্রশ্ন, ‘‘পথকুকুরের নির্বীজকরণ ও টিকাকরণ পদ্ধতির সাফল্য জাহির করে পুরসভার তরফে ঢালাও প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। আমার ওয়ার্ডে ২০২৩ সালে একটি মাত্র শিবির হয়েছিল। সেই শিবিরের মাধ্যমে পথকুকুরদের টিকাকরণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু এত বড় ওয়ার্ডে একটি শিবির যথেষ্ট নয়।’’

Advertisement

পথকুকুর ধরতে পুরসভার ডগ স্কোয়াডের অধীনে ন’টি গাড়ি এবং ২৫ জন কর্মী রয়েছেন। পথকুকুরদের নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার রাধিকা বসুর অভিযোগ, ‘‘পুরসভার ডগ স্কোয়াডের কর্মীরা কোনও প্রশিক্ষণ এবং নেট বা জাল ছাড়াই কুকুর ধরতে আসেন। লাঠিতে দড়ি বেঁধে কুকুর ধরার এই পদ্ধতি ঠিক নয়। এর ফলে গাড়ি নিয়ে গেলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কুকুর ধরার কাজটাই হয় না।’’ তাঁর মতে, ওদের পিছনে না ছুটে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করে যত্ন সহকারে ধরতে হবে। আমরা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে এ ভাবেই কুকুর ধরি। না হলে কুকুর তো ছুটে পালাবেই।’’

পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার অবশ্য দাবি, ‘‘এলাকা থেকে অভিযোগ পেলে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই পথকুকুরদের ধরে ধাপা ও এন্টালির ডগ পাউন্ডে নিয়ে আসা হয়।’’ পুর স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘শহরের ১৪৪টি ওয়ার্ড থেকে অসুস্থ পথকুকুরকে সরাতে নিয়মিত ফোন আসে। এ নিয়ে পুরপ্রতিনিধি থেকে ভিআইপিরাও দ্বারস্থ হন পুরসভার এই বিভাগে। কিন্তু ধাপা ও এন্টালিতে কুকুর রাখার তিনশোটি খাঁচা রয়েছে। ফলে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় বহু ক্ষেত্রে অভিযোগ পেয়েও কুকুর ধরা সম্ভব হয় না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement