বিশ বাঁও: ঝোপ-জঙ্গলে ঢেকেছে হাসপাতাল চত্বর। নিজস্ব চিত্র
পশুদের জন্য সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরির অনুমোদন মিলেছিল ১২ বছর আগে। চারতলা হাসপাতাল তৈরি করতে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দও হয়েছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই কাজ শেষ হয়নি। বেলগাছিয়ায় প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সেই পশু হাসপাতাল নির্মাণের জন্য ২০০৯ সালে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের অনুমোদন মিললেও আজও সেই প্রকল্প বিশ বাঁও জলে। ক্যাম্পাসের মধ্যে হাসপাতালের ভবনের একাংশ তৈরি হওয়ার পরেও অসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে হয়েছে সেটি।
প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, বহির্বিভাগ-সহ পশুদের আধুনিক মানের চিকিৎসার সুবিধা দিতে একটি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল গড়ার ব্যাপারে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেই প্রস্তাব মেনে ২০০৯ সালে প্রায় ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু সেই হাসপাতাল ভবনের একাংশ তৈরি হয়ে গেলেও এখনও সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সাবস্টেশন বসানোর অনুমোদন মেলেনি। ফলে ভবনের তৈরি হওয়া অংশটিও পড়ে রয়েছে বিনা ব্যবহারে।
এত দিনেও ওই পশু হাসপাতাল নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হল না কেন? এর জন্য প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের গড়িমসিকেই দায়ী করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতর সবুজ সঙ্কেত দিলেই হাসপাতালের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। কিন্তু হাসপাতাল সংক্রান্ত ফাইলের কাজ তাড়াতাড়ি এগোচ্ছে না বলেই এই কাজে গতি আসছে না। এ প্রসঙ্গে দফতরের সচিব বি পি গোপালিকা বলেন, ‘‘হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা যখন হয়েছিল, তখন অন্য সরকার ক্ষমতায় ছিল। ওই প্রকল্পের অগ্রাধিকার এখন কতটা, সেটাও ভেবে দেখার বিষয়। ১২ বছর আগের প্রকল্পের কাগজপত্র খুঁজে দেখতে হবে।’’
তিনি আরও বলছেন, ‘‘১২ বছর আগের ওই প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দফতরকে লিখিত ভাবে জমা দিক। আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’’
এ দিকে, পশুদের চিকিৎসার জন্য ভাল হাসপাতালের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। ব্রিটিশ আমল থেকেই পশু চিকিৎসার জন্য বেলগাছিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি ক্লিনিক রয়েছে। সেখানে বহির্বিভাগে জরুরিকালীন চিকিৎসার সুবিধা মেলে। তবে সেটুকুই যথেষ্ট নয়।
শহরের পোষ্যপ্রেমীরা জানাচ্ছেন, আধুনিক মানের পশু হাসপাতাল তৈরি হলে সেখানে পোষ্যদের রেখে চিকিৎসার সুবিধা থাকবে।
প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চঞ্চল গুহ বলেন, ‘‘আধুনিক মানের হাসপাতাল নির্মাণের কাজ অবিলম্বে সম্পূর্ণ করতে আমরা দফতরকে জানিয়েছি। হাসপাতালের কাজ শেষ হলে প্রাণীদের চিকিৎসারও সুবিধা হবে।’