মরণোত্তর অঙ্গদান হল শহরে। প্রতীকী ছবি।
ফের মরণোত্তর অঙ্গদান হল শহরে। ৫৪ বছরের এক প্রৌঢ়ের ‘ব্রেন ডেথ’ হওয়ার পরে, তাঁর অঙ্গে নতুন জীবন পেলেন আরও তিন জন। তাঁরা প্রত্যেকেই এসএসকেএমে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বুধবার রাতে তাঁদের অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, কাঁকিনাড়ার বাসিন্দা, পেশায় মাছের ব্যবসায়ী ওই প্রৌঢ়ের নাম হেমন্ত শূর। গত ২১ মার্চ ভোরে তিনি নিজের কাজে যাচ্ছিলেন। মোটরবাইক নিয়ে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার সময়ে একটি ছোট গাড়ির সঙ্গে বাইকের ধাক্কা লাগে। রাস্তায় ছিটকে পড়ে মাথায় চোট পাওয়ায় জ্ঞান হারান হেমন্ত। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, পৌনে ৮টা নাগাদ তাঁরা বিষয়টি জানতে পারেন। জানা যায়, অচৈতন্য অবস্থায় হেমন্তকে নৈহাটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর পরে পরিবারকে জানানো হয়, ওই প্রৌঢ়কে কল্যাণীর জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
পরিজনেরা সেখানে গিয়ে হেমন্তকে প্রথমে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তার পরে সে দিন বিকেলেই এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ারে ভর্তি করা হয় তাঁকে। রেড জ়োনে রাখা হয়েছিল হেমন্তকে। পরে তাঁকে ক্রিটিক্যাল কেয়ারে স্থানান্তরিত করা হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ২৭ মার্চ রাতেই চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন, ওই প্রৌঢ়ের ব্রেন ডেথ হচ্ছে। ২৮ মার্চ সে বিষয়ে নিশ্চিত হন তাঁরা। এর পরে হেমন্তের স্ত্রী ও মেয়ে মরণোত্তর অঙ্গদানের বিষয়ে হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেই মতো ‘রিজিয়োনাল অর্গান অ্যান্ড টিসু ট্রান্সপ্লান্ট অর্গানাইজ়েশন’ (রোটো)-এর তরফে গ্রহীতা চিহ্নিত করা হয়।
জানা যাচ্ছে, প্রথমে ঠিক হয়েছিল, দু’টি বৃক্ক ও যকৃৎ পাবে এসএসকেএম, হৃৎপিণ্ড পাবে আর এন টেগোর হাসপাতাল। সেই মতো অঙ্গ তোলার প্রস্তুতিও শুরু হয়। কিন্তু, শেষ মুহূর্তে দেখা যায়, প্রৌঢ়ের হৃৎপিণ্ডের অবস্থা ভাল নয়। ফলে, সেটি তোলা হয়নি। তবে, বৃক্ক ও যকৃৎ সংগ্রহ করা হয়। ২৯ বছরের এক তরুণী ও ৩৭ বছরের এক যুবক পেলেন বৃক্ক। অন্য দিকে, ৬১ বছরের এক প্রৌঢ়ের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে যকৃৎ।