—প্রতীকী চিত্র।
মামলার ভার নিয়ে অন্য দিনের মতোই রাস্তায় নেমেছিল বেসরকারি বাসটি। গড়িয়া মোড়ে যাত্রী নামিয়ে বেপরোয়া গতিতে ঘোরানোর সময়ে সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক ব্যক্তিকে ধাক্কা মারে। এর পরে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে যায়। স্থানীয়েরাই গুরুতর আহত অবস্থায় ওই পথচারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বুধবার সকালে এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে নেতাজিনগর থানা এলাকার গড়িয়া মোড়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম দিলীপ ঘোষ (৬০)। বাড়ি ফলতায়। তিনি এক বেসরকারি সংস্থায় নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন। এ দিন সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আলিপুর আদালতে একটি কাজে যাচ্ছিলেন ওই প্রৌঢ়। গড়িয়া মোড়ের কাছে রাস্তা পার হওয়ার সময়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি। বেপরোয়া গতিতে গড়িয়া-উল্টোডাঙা রুটের বেসরকারি বাসটি তাঁকে ধাক্কা মারে। গাড়ির ধাক্কায় রাস্তায় পড়ে গেলে প্রৌঢ়ের মাথায় উপর দিয়েই চলে যায় বাসের সামনের চাকা। স্থানীয় বাসিন্দারা তড়িঘড়ি একটি অটোয় করে তাঁকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানান।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে নেতাজিনগর থানার পুলিশ। দুর্ঘটনার সময়ে বাসটিতে কোনও যাত্রী ছিলেন না বলে স্থানীয়েরা জানিয়েছেন। এক প্রত্যক্ষদর্শী ভোম্বল মণ্ডল বলেন, ‘‘হঠাৎ চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে দোকান থেকে বেরিয়ে দেখি, এক জন বয়স্ক মানুষ রাস্তায় পড়ে আছেন। গলগল করে রক্ত বেরোচ্ছে। দূরে বাসটি দাঁড়িয়ে।’’ দুর্ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে লালবাজারের ফেটাল স্কোয়াড। পুলিশের তরফে মৃতের পরিবারকেও খবর দেওয়া হয়েছে। আটক করা হয়েছে বাসটি। তবে বাসের চালক ও খালাসি পলাতক।
এই দুর্ঘটনার পরে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাসটির বিরুদ্ধে ট্র্যাফিক বিধি-ভঙ্গের একাধিক মামলা ছিল। সেটির বিরুদ্ধে শুধু সাইটেশনেরই মামলা রয়েছে ৫২৭টি। তার মধ্যে ৯৫টি মামলা এখনও বিচারাধীন। এ ছাড়া, তীব্র গতিতে ও বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানো, সিগন্যাল অমান্য করার মতো একাধিক অভিযোগও রয়েছে। আর এখানেই প্রশ্ন, এত মামলা নিয়ে দিনের পর দিন বাসটি চলছিল কী ভাবে? লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার আগে কিছু বলা সম্ভব নয়।’’