বৃহস্পতিবার গভীর রাতের এই বাস দুর্ঘটনায় প্রাণঘাতী না হলেও জখম হয়েছেন বাসের কয়েক জন যাত্রী। প্রতীকী ছবি।
ফের দুর্ঘটনা চিংড়িঘাটায়।
এ বার বেপরোয়া গতিতে ছুটে আসা বাস পথ-বিভাজিকায় (ডিভাইডার) ধাক্কা মেরে, রেলিং ভেঙে পৌঁছে গেল অন্য দিকে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতের এই দুর্ঘটনা প্রাণঘাতী না হলেও জখম হয়েছেন বাসের কয়েক জন যাত্রী। ওই বাসে একটি ম্যানেজমেন্ট কলেজের পড়ুয়ারা ছিলেন। ইডেনে আইপিএলের খেলা দেখতে যাওয়ার জন্য ভাড়া করা হয়েছিল সেটি। খেলা দেখে রাতে ফেরার সময়ে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। সঙ্গে সঙ্গেই জখমদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বাসটি আটক করেছে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ। চালকের খোঁজ চলছে।
পুলিশ জানিয়েছে, রাত তিনটে নাগাদ দুর্ঘটনা ঘটে। ফাঁকা রাস্তা ধরে সায়েন্স সিটির দিক থেকে উল্টোডাঙার দিকে যাচ্ছিল বাসটি। গতিও যথেষ্ট ছিল বলে জানা গিয়েছে। চিংড়িঘাটা উড়ালপুল থেকে সামান্য এগিয়ে বাঁক নেওয়ার সময়েই বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। পথ-বিভাজিকায় ধাক্কা মেরে সেটি রেলিং ভেঙে দেয়। এর পরেই রাস্তার উল্টো দিকে গিয়ে একটি জায়গায় ধাক্কা মেরে থেমে যায়। দুর্ঘটনার অভিঘাতে বাসের সামনের অংশ ভেঙেচুরে গিয়েছে।
শুক্রবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, ভাঙা রেলিং সরিয়ে সেখানে কলকাতা পুলিশ গার্ডরেল বসিয়েছে। যে জায়গায় বাসটি ধাক্কা মেরে থেমে গিয়েছিল, সেখানে পড়ে রয়েছে বাসের সামনের আলো-সহ বিভিন্ন ভাঙাচোরা অংশ। স্থানীয়দের বক্তব্য, ওই দুর্ঘটনা দুপুরের দিকে ঘটলে আরও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হত। এমনকি, ওই সময়ে উল্টো দিকের রাস্তায় কোনও গাড়ি থাকলে প্রাণঘাতী ঘটনা ঘটে যেত বলেই আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, দমদমের বাসিন্দা কয়েক জন পড়ুয়া আইপিএলের খেলা দেখতে যাওয়ার জন্য ভাড়া করেছিলেন বাসটি। এই দুর্ঘটনায় পাঁচ-ছ’জন পড়ুয়া জখম হন। ওই রাতেই তাঁদের এসএসকেএমে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায় পুলিশ। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুলিশের অনুমান, গভীর রাতে গাড়ি চালানোর সময়ে কোনও ভাবে চালক ঝিমিয়ে পড়েছিলেন। তার জেরেই তিনি বাসের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে থাকতে পারেন।
উল্লেখ্য, চিংড়িঘাটা মোড়ে অতীতে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। কখনও বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে পথচারীর। কখনও আবার বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে স্কুলপড়ুয়ার। ওই জায়গায় ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করে কলকাতা পুলিশ। অন্য দিকে, আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে বিধাননগর দক্ষিণ থানা। চিংড়িঘাটায় পর পর দুর্ঘটনা ঘটায় দুই কমিশনারেটকেই যৌথ ভাবে তৎপর থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।