—ফাইল চিত্র।
জানিয়েছে, তারা প্রশিক্ষণ শুরু করবে মার্চের মাঝামাঝি অথবা এপ্রিলের গোড়ায়। এখন চলছে তারই প্রস্তুতি। শহরের অভিজাত ক্লাবগুলি জানিয়ে দিয়েছে, তাদের সুইমিং পুল করোনা-বিধি মেনে ইতিমধ্যেই খুলে দেওয়া হয়েছে।
রবীন্দ্র সরোবরের একটি সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্তা অমিত বসু জানালেন, ক্লাবের সদস্য এবং তাঁদের অতিথিদের জন্য সুইমিং পুল খুলেছে। যাঁরা প্রথম সাঁতার শিখবেন, তাঁদের প্রশিক্ষণ শুরু হবে ৪ এপ্রিল থেকে। অমিতবাবু বললেন, ‘‘করোনার জন্য দু’বছর ধরে নতুনদের প্রশিক্ষণ হয়নি। ওই প্রশিক্ষণই আমাদের আয়ের প্রধান উৎস। এ বছরেও প্রশিক্ষণ চালু না হলে চরম আর্থিক দুর্দশায় পড়তে হত। আশা করা যায়, এই মরসুমটা ভালই যাবে। আর করোনার আতঙ্কে দিন কাটাতে হবে না।’’
কলেজ স্কোয়ারের একটি সাঁতার ক্লাবের কর্মকর্তা সন্তোষ দাস জানালেন, দু’টি মরসুম বন্ধ থাকায় ক্লাব রীতিমতো ধুঁকছে। তিনি বলেন, ‘‘বাচ্চাদের মিনি পুল খুলবে ১৭ মার্চ। বড় পুল থেকে জল তোলার কাজ শুরু করেছে পুরসভা। আগের জল বার করে নতুন জল ভরা হবে। আশা করা যায়, এই প্রক্রিয়া মার্চের শেষ বা এপ্রিলের গোড়ার মধ্যে হয়ে যাবে। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে বা মাঝামাঝি নাগাদ বাইরের জলাশয়ে পুরোদমে প্রশিক্ষণ চালু করতে পারব।’’ সন্তোষবাবু জানালেন, তাঁদের ক্লাবে দেড় থেকে দু’হাজার খুদে সাঁতার শেখে। করোনা-বিধি মেনেই প্রশিক্ষণ চলবে। সবাইকেই মাস্ক পরে আসতে হবে। আনতে হবে স্যানিটাইজ়ার। যাদের বয়স ষোলোর বেশি, তাদের প্রতিষেধকের জোড়া ডোজ়ের শংসাপত্র সঙ্গে রাখতে হবে।
হেদুয়ার একটি সাঁতার ক্লাবের কর্মকর্তা সনৎ ঘোষ জানালেন, সেখানেও পুরসভা জল বার করার কাজ করছে। জল বেরিয়ে গেলে পুল পরিষ্কার করা হবে। রেলিং-সহ কিছু জায়গায় রং হবে। তার পরে ভরা হবে টাটকা জল। তাঁর আশা, ১৪ এপ্রিলের মধ্যেই প্রশিক্ষণ শুরু করে দেওয়া যাবে। সনৎবাবু জানালেন, দু’বছর বন্ধ থাকায় সাঁতারের প্রশিক্ষকেরা শারীরিক ভাবে কতটা সক্ষম আছেন, তা-ও দেখতে হবে। তার পরেই তাঁদের প্রশিক্ষণের কাজে লাগানো হবে। কারণ, গত দু’বছরে তাঁরাও নিয়মিত ভাবে সাঁতার কাটতে পারেননি।
পার্ক স্ট্রিট এলাকার একটি ক্লাবের ক্রীড়া বিভাগের কর্তা সৌমেন্দু গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, ‘‘গত ৩ মার্চ থেকে আমাদের ক্লাবের পুলে সাঁতার শুরু হয়েছে। ৭৫ শতাংশ সদস্যকে সময় ভাগ করে নিয়ে সাঁতার কাটতে বলা হয়েছে। পরিস্থিতি ঠিক থাকলে এই সংখ্যা বাড়ানো হবে।’’
সাঁতারের প্রশিক্ষণ শুরু হতে চললেও অভিভাবকদের অনেকেই জানতে চাইছেন, এই পরিস্থিতিতে সাঁতার কতটা নিরাপদ? কারণ, করোনা এখনও পুরোপুরি যায়নি। তাঁদের প্রশ্ন, জল থেকে সংক্রমণের আশঙ্কা নেই তো? শিশুরোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ জানালেন, এ নিয়ে আর আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তিনি বলেন, ‘‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে হবে। বাচ্চাদের সাঁতার কাটতে আর কোনও অসুবিধা নেই।’’
সাঁতারে যত তাড়াতাড়ি ফেরা যায়, ততই ভাল বলে মত সাঁতারু বুলা চৌধুরীরও। তাঁর কথায়, “করোনা প্রায় শেষের দিকে। সাঁতারের মরসুমও শুরু হবে। যাঁরা সাঁতারকে পেশা হিসেবে বেছেছেন, তাঁদের দু’বছরে অনেক ক্ষতি হয়েছে। এই মরসুমে আশা করি আর করোনার ভ্রুকুটি থাকবে না।”