শেষ বেলার প্রচার। সল্টলেকে আকাশ ঢেকেছে দলীয় পতাকায়। বৃহস্পতিবার। ছবি: শৌভিক দে।
বিধাননগর পুর-নিগমের নির্বাচনের প্রচারের শেষ দিনে একে অপরের বিরুদ্ধে বহিরাগত দিয়ে ‘সন্ত্রাস’ করার অভিযোগ আনল সিপিএম এবং তৃণমূল। উভয়েই ডাক দিল পথে নেমে সন্ত্রাস মোকাবিলার।
এত দিন বহিরাগত নিয়ে সিপিএম-সহ বিরোধীরা একযোগে এই অভিযোগ এনেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পাল্টা তৃণমূল বলত, হারবে বলেই বিরোধীরা অপপ্রচার করে। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিধাননগরে সিপিএম নেতা গৌতম দেব ‘স্বেচ্ছাসেবক’ নামিয়ে সন্ত্রাস প্রতিরোধের ডাক দিতেই খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘সিপিএমের কথাই প্রমাণ করছে কারা বহিরাগত আনতে চাইছে।’’ এ ভাবেই ‘বহিরাগত’ প্রশ্নে নির্বাচনের দু’দিন আগেই উত্তেজনার পারদ চড়ল বিধাননগরে।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে সিপিএম নেতা গৌতম দেব বলেন, ‘‘ভোটের আগেই বহিরাগত ঢুকছে সল্টলেকে।’’ রীতিমতো ৭টি বাসের নম্বর দিয়ে বহিরাগত ঢোকার অভিযোগ করে তাঁর হুঁশিয়ারি, পুলিশ আইন-শৃঙ্খলার বিষয়ে পদক্ষেপ না করলে প্রতিরোধ হবে। শাসক দলের বাইক-বাহিনী ঢুকলে ওই সব মোটরবাইক কেষ্টপুর খালে ফেলা হবে। তাতে গোলমাল হলে দায় প্রশাসনের। খাদ্যমন্ত্রী পাল্টা বলেন, ‘‘আমরাও জানি, হুগলি, বারুইপুর, বরাহনগর, বিরাটি থেকে লোক আনছে সিপিএম।
যদিও প্রতিরোধের ডাক দিলেও গৌতমবাবু বলেন, ‘‘আমরা হিংসা চাই না। এখন ক্ষমতায় নেই। মারামারি করার লোকও নেই। তবে আমাদের কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ ভোটারদের আঘাত করলে আমাদের ৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবক পথে নামবে।’’
গৌতমবাবুর দাবি প্রসঙ্গে পাল্টা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘হিংসায় প্ররোচনা দেওয়ার জন্য ওঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করছি। যতই প্ররোচিত করুক, আমাদের কর্মীরা তাতে পা দেবে না। তবে সিপিএম রাস্তায় নেমে গুণ্ডামি করলে আমরা মোকাবিলা করব।’’
এর পাশাপাশি, গৌতমবাবুর দাবি, ভোটের দিনে আহত সাজিয়ে কিছু লোককে সল্টলেকে ঢোকানো হবে। পুলিশ অবশ্য বলছে, বহিরাগত নিয়ে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। অভিযোগ এলে সত্যতা খতিয়ে দেখা হবে। আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ২০০০-এরও বেশি পুলিশকর্মীকে পথে নামাবে প্রশাসন। সশস্ত্র ও লাঠিধারী পুলিশের পাশাপাশি মোবাইল পেট্রোলিং থেকে শুরু করে শীর্ষস্তরের কর্তারা পরিস্থিতির উপরে নজরদারি রাখবেন।
নিবার্চন কমিশন সূত্রের খবর, পুর-নিগমের নির্বাচনে ১৭১টি কেন্দ্রের ৪৩৮টি বুথের সব ক’টিই উত্তেজনাপ্রবণ বলে ধরা হয়েছে। তবে উত্তেজনার মাত্রা অনুসারে সেগুলি আলাদা করা হয়েছে।
এ দিকে প্রচারের শেষ দিনে তৃণমূল, সিপিএম, বিজেপি এবং কংগ্রেস প্রার্থীরা মিছিল ও রোড শো করেন। সেখানে প্রতিটি দলেরই রাজ্যস্তরের একাধিক নেতানেত্রী হাজির হয়েছিলেন।