বাঁদিক থেকে অনন্ত প্রামাণিক, অভিজিৎ দলুই ও অর্ণব ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র
আগাম জামিনের প্রস্তুতিতে উকিলের সঙ্গে পরামর্শ করতে আসাই কাল হল। অবশেষে সেন্ট পলস কলেজে ছাত্র নিগ্রহ কাণ্ডে পাঁচ অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করল পুলিশ।
মঙ্গলবার উত্তর কলকাতার জগৎ সিনেমার কাছ থেকে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম অর্ণব ঘোষ, আব্দুল কায়ুম মোল্লা, শেখ ইনামুল হক, অভিজিৎ দোলুই এবং অনন্ত প্রামাণিক। সেন্ট পলস কলেজের ঘটনা সামনে আসার পরই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পুলিশকে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তারপর থেকেই অভিযুক্তদের ধরতে তৎপর হয় পুলিশ। শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশের পর সপ্তাহ ঘুরতেই পাঁচ অভিযুক্ত গ্রেফতার হওয়ায় পুলিশ মহলে কিছুটা স্বস্তির হাওয়া।
ছাত্র নিগ্রহের ঘটনায় আমহার্স্টর স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকেই পাঁচ অভিযুক্তকে ধরতে বিভিন্ন সূত্রে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, কিন্তু অভিযুক্তরা ঘন ঘন এলাকা বদলে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। এর মধেই মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান-সহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযানও চালায় পুলিশ। তবে গোপনে তারা যে আগাম জামিনের আবেদনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল, সেই বিষয়টি একপ্রকার নিশ্চিত হয় পুলিশ। তার জন্য আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগও শুরু করে। অবশেষে অভিযুক্তদের মোবাইল টাওয়ার লোকেশনের সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পারে, উত্তর কলকাতায় পাঁচ জন কাছাকাছি জড়ো হয়েছে। এরপরই অভিযানে নামেন আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার তদন্তকারী অফিসাররা। অবশেষে জগৎ সিনেমার কাছ থেকে তাদের ধরে পুলিশ। আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করতে এক আইনজীবীর সঙ্গে তারা দেখা করতে এসেছিল বলে জানা গিয়েছে।
আব্দুল কায়ুম মোল্লা (বাঁ দিকে) ও শেখ ইমানুল হক। —নিজস্ব চিত্র
গত ১৭ মে ছাত্র সেন্ট পলস কলেজের ছাত্র সংসদের এক পদাধিকারী তথা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতাকে নগ্ন করে নিগ্রহ করা হয়। গোটা ঘটনা মোবাইলে ভিডিও তুলে তা ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। অভিযোগ ওঠে টিএমসিপির ইউনিট সভাপতি অর্ণব ঘোষ, কলেজের এক শিক্ষাকর্মী অনন্ত প্রামাণিক এবং বহিরাগত টিএমসিপি সদস্য শেখ ইনামুল হকের বিরুদ্ধে। এছাড়া ঘটনার সময় টিএমসিপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কায়ুম মোল্লা এবং কলেজের ছাত্র অভিজিৎ দলুই ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও তারা কোনও প্রতিবাদ করেনি বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন: নতুন ভাড়া চালু হতেই নয়া হয়রানি
আরও পড়ুন: চকচকে আপেল খান? তৈরি রাখুন স্বাস্থ্যবিমাও
ঘটনার কয়েক দিন পর ওই ভিডিও সামনে আসতেই শিক্ষা ও রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় শুরু হয়। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও কড়া বার্তা দেন। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। তার পর থেকেই তৎপর হয় পুলিশ। অবশেষে মঙ্গলবার তারা গ্রেফতার হয়।