এমন ভিড় সামলাতেই বদলানো হবে আলিপুর চিড়িয়াখানার মূল ফটক। নিজস্ব চিত্র
ভরা মরসুমে এত ভি়ড় হয় যে দর্শকদের ভিড় রাস্তার উপরে চলে আসে। ফলে যানবাহনের গতিও শ্লথ হয়ে যায়। সমস্যার সমাধানে এ বার সিংহ দেখার সেই ‘সিংহদুয়ার’ বদলাতে চলেছেন আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। চিড়িয়াখানায় ঢোকার বর্তমান প্রবেশপথ বদলানো হবে। চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, ভিড়ের সময়ে দর্শকদের ঢোকা-বেরোনোয় যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেই মতো নতুন প্রবেশপথের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, বর্তমান প্রবেশপথের অবস্থান এমন যে একটু বেশি দর্শক হলেই ভিড় রাস্তায় চলে আসে। তাই নতুন প্রবেশপথের নকশা এমন ভাবে করা হয়েছে যাতে গেটটা কিছুটা ভিতরে ঢুকে আসে। অর্থাৎ, চিড়িয়াখানার সামনে যাতে দর্শকেরা দাঁড়ানোর জায়গা পান। আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিসকুমার সামন্ত বলেন, ‘‘ম্যানুয়াল গেটটি ভিতরের দিকে করার পরিকল্পনা হচ্ছে। যাতে সামনে বাড়তি জায়গা পাওয়া যায়।’’ নতুন ব্যবস্থায় কম্পিউটারাইজ়ড টিকিট চালুর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
নতুন বছরে কয়েকটি সংযোজন করতে চলেছেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। নিশাচর প্রাণীদের ঘর তৈরির পাশাপাশি হায়নাদের ঘর তৈরির কাজ চলছে। আগামী মাসের শেষেই সে কাজ সম্পূর্ণ হবে বলে অনুমান কর্তৃপক্ষের। বুনোকুকুরদের ঘর তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে। তবে এই মুহূর্তে আলিপুর চিড়িয়াখানায় কোনও বুনোকুকুর নেই। তবে ‘এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম’-এর মাধ্যমে অন্য চিড়িয়াখানা থেকে বুনোকুকুর আনা হবে বলে সূত্রের খবর। কর্তৃপক্ষের আশা, এই সব চমক দেখতে নতুন বছরে আরও ভিড় বাড়বে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘দর্শক টানতে সব পরিকল্পনা হচ্ছে। তবে শুধু ভিড় বাড়ানোই নয়, দর্শকদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেই মতো পরবর্তী প্রকল্প নিয়ে ভাবা হচ্ছে।’’
চিড়িয়াখানার সামনে দর্শকদের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা ট্র্যাফিক পুলিশের কাছে একটা ‘চ্যালেঞ্জ’। শীতের মরসুমে যখন বাড়তি দর্শক হয়, চি়ড়িয়াখানার কর্মীরাও তখন ভিড় সামলাতে কাজ করেন। তার পরেও যাতে কোনও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি না হয়, পুলিশের তরফে সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে। ওই এলাকায় পথচারীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য একটি ফুটব্রিজও তৈরি করেছে কলকাতা পুরসভা। কিছু দিনের মধ্যেই সেটি চালু হয়ে যাবে।
চিড়িয়াখানা সূত্রের খবর, নতুন ফটক তৈরির পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে কিছুটা দেরি আছে। কারণ, প্রবেশপথ পরিবর্তনের যে পরিকল্পনা হয়েছে, তার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। তবে তাতে সাড়া মেলেনি। চিড়িয়াখানা অধিকর্তার কথায়, ‘‘দ্বিতীয় বার দরপত্র আহ্বান করা হবে। এ জন্য কাজ শেষ হতে কিছুটা সময় লাগবে।’’