প্রতীকী ছবি।
আদালতের নির্দেশই সার! কালীপুজোর রাতে নিয়মের তোয়াক্কা না করেই দেদার বাজির তাণ্ডব চলল কলকাতা-সহ শহরতলি এলাকায়। বাদ ছিল না রাজ্যের কয়েকটি এলাকাও। যার জেরে বৃহস্পতিবার শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বায়ুদূষণের মাত্রা একধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত সওয়া ২টো নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে বাজি ফাটানোর মোট ৪৫টি অভিযোগ জমা পড়েছে। উত্তর থেকে দক্ষিণ— কলকাতার সব প্রান্ত থেকেই আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার অভিযোগ করেছেন বাসিন্দারা। বাদ যায়নি শহরতলির বিভিন্ন এলাকাও। হাওড়ার শিবপুর বা উত্তর ২৪ পরগনা জেলার খড়দহ-সহ রাজ্যের কয়েকটি এলাকাতেও একই ভাবে যথেচ্ছ বাজি পোড়ানোর অভিযোগ পেয়েছে পর্ষদ। রাতে পর্ষদ জানিয়েছে, উত্তর কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট থেকে দক্ষিণের বেহালা, তিলজলা, হরিদেবপুর, পাটুলি, সোনারপুর, দমদম, লেকটাউন বা কসবার মতো এলাকায় আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বাজি পোড়ানো হয়েছে।
কতটা বেড়েছে বায়ুদূষণের মাত্রা? তার কয়েকটি নমুনা তুলে ধরেছে পর্ষদ। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ বালিগঞ্জের মতো এলাকায় বায়ুদূষণ ছিল মাঝারি মাত্রার। ওই সময় বাতাসে সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ অনুযায়ী তার গুণমান ছিল ১৮০ পিএম। তবে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বে়ড়ে যায়। রাত ১২টা নাগাদ বাতাসের গুণমান পৌঁছয় ৪০২ পিএম-এ। যা স্বাস্থ্যের পক্ষের ক্ষতিকারক বলেই জানিয়েছে পর্ষদ। রাত ১টা নাগাদ তা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৪৪৬ পিএম-এ অর্থাৎ অত্যন্ত ক্ষতিকারক মাত্রায়। একই ভাবে যাদবপুর, বিধাননগর, রবীন্দ্র সরোবর, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল বা ফোর্ট উইলিয়াম সংলগ্ন এলাকার দূষণের মাত্রা রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার কালীপুজোর সময় কেবলমাত্র পরিবেশবান্ধব সবুজ আতশবাজি ছাড়া অন্যান্য বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্য সরকারও জানিয়েছিল, দীপাবলি এবং ছটপুজোর সময় দু’ঘণ্টার ছাড় দিলেও পরিবেশবান্ধব সবুজ আতশবাজি ছাড়াও সব ধরনের বাজির কেনাবেচা, মজুত বা ব্যবহার নিষিদ্ধ। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে যাতে বাজি ফাটানো না হয়, তার নজরদারিতে ২০টি দল গঠন করেছে পর্ষদ। তবে কালীপুজোর রাতে যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা এবং নজরদারি এড়িয়ে বাজি ফাটানো যে বন্ধ হয়নি, তা-ই প্রমাণ করল বায়ুদূষণের ঊর্ধ্বমুখী সূচক।