চুপিচুপি: পুলিশি সহায়তায় স্কুল থেকে বেরিয়ে আসছেন শিক্ষিকারা। শুক্রবার গভীর রাতে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
তখন রাত প্রায় একটা। পড়িমড়ি করে ছুটছেন জনা কুড়ি শিক্ষিকা। দু’পাশে পুলিশের ব্যারিকেড। আর পিছনে বিক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা ধিক্কার দিতে দিতে ছুটে চলেছেন।
শুক্রবার রাতে এ ভাবেই জি ডি বিড়লা সেন্টার ফর এডুকেশনের শিক্ষিকাদের ঘেরাওমুক্ত করে পুলিশ। পরে একটি বাসে করে তাঁদের বাড়ি পৌঁছে দেয় পুলিশ। এর আগে এক অভিভাবককে মারধর করার অভিযোগও ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। উল্টে এক অভিভাবকের উপরেও চড়াও হয়েছেন অন্য অভিভাবকেরা।
ওই স্কুলে চার বছরের এক ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তাঁদের গ্রেফতার করলেও অধ্যক্ষা শর্মিলা নাথের গ্রেফতারি ও পদত্যাগের দাবিতে সব শিক্ষক ও শিক্ষিকাকেই ঘেরাও করে রাখা হয়। এর পরে রাত পৌনে একটা নাগাদ পুলিশের বাড়তি বাহিনী পাঠানো হয় ওই স্কুলে। রাত ন’টা নাগাদ পুলিশের সঙ্গে সাময়িক ধস্তাধস্তিও হয়েছিল। কিন্তু গোলমাল শুরু হয় রাত সাড়ে বারোটার পরে। সেই সময়ে এক অভিভাবককে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ওই ব্যক্তির ঠোঁট ও নাক দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে।
অভিভাবকদের দাবি, তাঁদের মধ্যে থেকেই এক জন পুলিশ ও স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মধ্যস্থতা করতে যান। এর পরে সুযোগ বুঝে স্কুলের পিছনের দরজা দিয়ে শিক্ষিকাদের বার করে আনে পুলিশ। অভিভাবকেরা বলেন, ‘‘আদতে ওই ব্যক্তিই বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। কোনও আলোচনা না করেই শিক্ষিকাদের পালাতে সাহায্য করেছেন। পুলিশের ব্যারিকেড থাকায় আমরা কাছে ঘেঁষতে পারিনি।’’ এর পরেই রাস্তায় দৌড়তে থাকেন তাঁরা।
কিন্তু অভিভাবকদের একাংশ ওই ব্যক্তিকে ‘টার্গেট’ করে নেন। মহিলারা ওই ব্যক্তিকে তাড়া করেন। তিনি দৌড়ে একটি পুলিশের গাড়িতে উঠতে গেলে মহিলারা তাঁকে ধরে টানাটানি শুরু করেন। আক্রমণের হাত থেকে কোনওক্রমে নিজেকে বাঁচিয়ে গাড়িতে ওঠেন তিনি। কয়েক জন অভিভাবক গাড়ির চাকার হাওয়া খুলতে গেলে লাঠি হাতে তেড়ে আসে পুলিশ। তার পরে পুলিশের গাড়িতে ওই ব্যক্তিকে বার করে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের এই ভূমিকায় ক্ষুব্ধ অভিভাকেরা বলেন, ‘‘রবিবার সর্বসম্মত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ হবে।’’