প্রতীকী ছবি।
বিধাননগরে ফের জ্বরে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। তাঁর পরিবারের দাবি, ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গিতে। জ্বর আসার পরে গত সপ্তাহের সোমবার স্বপন মিস্ত্রি (৫৭) নামে ওই ব্যক্তির ডেঙ্গি পরীক্ষা করা হয়। পরিবারের দাবি, রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে সে দিন তাঁকে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সোমবার রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
ঘটনাটি ঘিরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে বিধাননগর পুর এলাকার সাহাপাড়ায়। সেখানেই থাকতেন পেশায় প্রোমোটার স্বপনবাবু। যদিও ডেঙ্গিতেই স্বপনবাবুর মৃত্যু হয়েছে কি না, তা নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও ঘোষণা করেনি বিধাননগর পুরসভা। পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় মঙ্গলবার জানান, জ্বরে আক্রান্তের ডেঙ্গি হয়েছে, এমনটা সন্দেহ করা হচ্ছে বলে পরিবার জানিয়েছিল। খবর আসতেই তার পরের দিন ওই বাড়িতে ও আশপাশে অভিযান চালায় পুরসভা। তাতে ডেঙ্গির মশার লার্ভাও মিলেছে বলে প্রণয়বাবু জানিয়েছেন।
গত ৮ নভেম্বর ডেঙ্গিতে বাগুইআটির গৌতমপাড়া এলাকায় এক তরুণীর মৃত্যু হয়। তার পরে এলাকায় ডেঙ্গি মোকাবিলায় তৎপরতা বাড়ে। স্বপনবাবুর পরিবারের দাবি, গত সোমবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও তাঁর প্লেটলেট ক্রমাগত নামতেই থাকে। তার পরে তাঁর শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। তাঁরা জানান, আপাতত স্বপনবাবুর দেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। আজ, বুধবার স্বপনবাবুর ছেলে বিদেশ থেকে ফিরলে তাঁর দেহ হাসপাতাল থেকে বার করা হবে।
অক্টোবর থেকেই ডেঙ্গির চোখরাঙানি শুরু হয়েছে বিধাননগরে। বর্তমানে পুর এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩০০ ছুঁইছুঁই। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সোমবার পর্যন্ত বিধাননগরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ২৯০ জন। পুর কর্তৃপক্ষ জানান, স্বপনবাবুর মৃত্যু ডেঙ্গিতে হয়ে থাকলে বিধাননগরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গিতে দু’জনের মৃত্যু হল।
ডেঙ্গির মোকাবিলায় নভেম্বরেই বিশেষ পদক্ষেপ করেছে বিধাননগর পুরসভা। আধিকারিকদের নিয়ে আলাদা টাস্ক ফোর্স, বরোভিত্তিক স্বাস্থ্যকর্মীদের নিয়ে কেন্দ্রীয় দল তৈরি-সহ একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে। এমনকি, সম্প্রতি পুরসভা ঘোষণা করেছে, ডেঙ্গির লার্ভা কোনও বাড়িতে পাওয়া গেলে সেই বাড়ির বাসিন্দাদের প্রথমে সতর্ক করা হবে। তার পরেও বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার না রাখলে বাড়িতে নোটিস ঝুলিয়ে দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যদিও পুরসভার অভিযোগ, মানুষ নিজেরাই সতর্ক হচ্ছেন না। আবার বাসিন্দাদের দাবি, রোগ মোকাবিলায় আরও সক্রিয় হতে হবে পুরসভাকেও। বাগুইআটি, জোড়ামন্দির, সাহাপাড়ার মতো এলাকায় অতীতেও ডেঙ্গির প্রকোপ বড় আকার নিয়েছিল।