দু’দিন আগেই দেড় মাসের শিশুকন্যাকে মাঠের এক কোণে ফেলে রেখেছিলেন নেতাজিনগর থানা এলাকার পল্লিশ্রীর বাসিন্দা এক মা। ফের সেই শিশুকন্যাকেই রবিবার বাড়ির আবর্জনায় ফেলে এলেন তিনি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মানসিক ভাবে অসুস্থ হওয়ায় শিশুটিকে মা বারবার রাস্তায় কিংবা আবর্জনার স্তূপে ফেলে আসছেন। শুধু মা নয়। শিশুটির দিদিমাও মানসিক রোগী বলে এ দিন দাবি করে পরিবার। পরিবারের তরফে জোছন রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘বেশ কয়েক বার চিকিৎসা করানো হয়েছে। লাভ হয়নি।’’
তবে এ বার আর বাড়িতে শিশুটিকে ফেরত পাঠাননি পাড়ার লোকেরা। তাকে উদ্ধারের পরে স্থানীয় বাসিন্দা শম্পা সরকার নিজের বাড়িতে রেখে চাইল্ড লাইনকে ফোন করেন। কিন্তু রবিবার হওয়ায় চাইল্ড লাইনে ফোন করে খবর দিতে গিয়ে কালঘাম ছোটে স্থানীয়দের।
তাঁদের অভিযোগ, শিশুকন্যাকে উদ্ধার করে নিয়ে যেতে সকাল সাড়ে দশটার পর থেকে ১০৯৮-এ বারবার ফোন করা হয়। কিন্তু টোল-ফ্রি নম্বরটি ২৪ ঘণ্টা খোলার কথা থাকলেও কেউ ফোন ধরেননি। পরে অন্য সূত্রে খবর পেয়ে দুপুর দুটো নাগাদ কলকাতা চাইল্ড লাইনের সদস্যেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। শিশুটিকে তাঁরা নেতাজিনগর থানায় নিয়ে যান। বিকেল পাঁচটা নাগাদ আইনি পদ্ধতি মেনে শিশুটিকে নিজেদের হেফাজতে নেয় চাইল্ড লাইন। কলকাতা চাইল্ড লাইন সূত্রের খবর, থানার উপস্থিতিতেই তারা শিশুটিকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। কিন্তু চাইল্ড লাইনের ১০৯৮-টোল ফ্রি নম্বরে বারবার ফোন করেও কেন পাওয়া গেল না? কলকাতা চাইল্ড লাইন জানিয়েছে, এ রকম হওয়ার কথা নয়। কেন হল, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।
শিশু কল্যাণ সমিতির নির্দেশে শিশুটিকে হোমে রাখার প্রক্রিয়া শুরু হবে আজ, সোমবার।
স্থানীয়দের প্রশ্ন, শিশুটিকে উদ্ধার তো করা হল। কিন্তু তার মানসিক ভাবে অসুস্থ মা এবং দিদিমার চিকিৎসার ব্যবস্থা কে করবে? চাইল্ড লাইন সূত্রের খবর, তারা নেতাজিনগর থানাকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে বলেছে। তা ছাড়া, আজ শিশু কল্যাণ সমিতির কাছেও এ নিয়ে তারা আবেদন করবে।