শোচনীয়: একটি বেসরকারি বাসে ব্যবহারের জন্য রাখা অতিরিক্ত চাকার অবস্থা এমনই বেহাল। কালীঘাটের কাছে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী।
মেয়ো রোডে মিনিবাস উল্টে দু’জনের মৃত্যুর পরে টনক নড়ল পুলিশের। স্বাস্থ্যের (ফিটনেস) শংসাপত্র ছাড়া পথে নামা বাস-মিনিবাসের বিরুদ্ধে ফের কড়া হয়েছে পুলিশ। একই সঙ্গে, বাসের টায়ার ‘রিসোল’ করা রয়েছে কি না, তা-ও তল্লাশি করে দেখতে বলা হয়েছে শহরের ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকে।
শনিবার মেয়ো রোডে ওই বাস দুর্ঘটনার পরে শহরের রাস্তায় ফিটনেস শংসাপত্র ছাড়া চলা বাসগুলিকে ধরপাকড় করতে শুরু করেছে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ। তদন্তে সামনে এসেছে, মেয়ো রোডের মিনিবাসটির চাকা রিসোল করা ছিল, প্রায় ক্ষয়ে গিয়েছিল ব্রেক প্যাড, স্টিয়ারিংয়েও ছিল একাধিক সমস্যা। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই সেটির এমন অবস্থা হয়েছিল বলে মনে করছে পুলিশ। শনি এবং রবিবারে শংসাপত্র ছাড়া পথে নামা ১৬টি বাস ও মিনিবাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি, রিসোল টায়ার নিয়ে যাত্রী পরিবহণ করার অভিযোগে ওই দু’দিনে ২১৪টি বাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও লালবাজার জানিয়েছে। এর মধ্যে শনিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে ৮৫টি বাস-মিনিবাসের বিরুদ্ধে। আর রবিবার ১২৯টি বাস-মিনিবাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। লালবাজারের এক কর্তা জানান, সোমবারেও এই অভিযান অব্যাহত ছিল। যাত্রী-নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এমন উদ্যোগ।
উল্লেখ্য, গত বছর জানুয়ারিতে ধর্মতলায় একটি মিনিবাস উল্টে গিয়েছিল। জখম হয়েছিলেন বেশ কয়েক জন। খোঁজ নিয়ে পুলিশ জানতে পেরেছিল, সেটির স্বাস্থ্যের শংসাপত্র ছিল না। এর পরেই কঠোর হয় পুলিশ। অভিযোগ, তার পরেই রাস্তা থেকে উধাও হয়ে গিয়েছিল বাস-মিনিবাস। এমনকি, বাস-মিনিবাসের বিভিন্ন সংগঠনের তরফে পুলিশের ধরপাকড় নিয়ে অভিযোগও জানানো হয় বিভিন্ন জায়গায়। অভিযোগ, তার পরেই বাসের স্বাস্থ্যের শংসাপত্র অভিযানে রাশ টানা হয়।
লালবাজার জানিয়েছে, যাত্রীদের হেনস্থা না করে টায়ার থেকে শুরু করে বিভিন্ন নথি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। নয়া ট্র্যাফিক জরিমানা বিধিতে ফিটনেস শংসাপত্র না থাকলে এককালীন ১০হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হচ্ছে। আর রিসোল টায়ার নিয়ে যাত্রী তুললে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হচ্ছে। পুলিশ জানায়, কোনও নথি দেখাতে না পারলে বাস-মিনিবাস বাজেয়াপ্ত করা হবে।