বৃহস্পতিবার সকালে বুকে ব্যথা নিয়ে এক রোগী আসেন বেলঘরিয়া, নিমতার বাসিন্দা চিকিৎসক গৌরব রায়ের বাড়িতে। রোগী দেখে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর কথা বলেন গৌরব। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় সেই রোগীর।
চিকিৎসক গৌরব রায় ও মারে আহত আত্মীয় নিজস্ব চিত্র
নিমতায় রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসককে বেধড়ক মার এবং বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল স্থানীয় বাসিন্দা ও রোগীর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। মারে আহত হয়েছেন চিকিৎসক। মাথা ফেটেছে তাঁর এক আত্মীয়ের।
বৃহস্পতিবার সকালে বুকে ব্যথা নিয়ে এক রোগী আসেন বেলঘরিয়া, নিমতার বাসিন্দা চিকিৎসক গৌরব রায়ের বাড়িতে। রোগী দেখে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর কথা বলেন গৌরব। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় সেই রোগীর। এর পরই রোগীর আত্মীয়েরা লোকজন নিয়ে এসে চিকিৎসকের বাড়িতে হামলা চালান। গৌরবের অভিযোগ, তাঁর বাড়ির ভিতরে ঢুকে জিনিসপত্র ভাঙচুর করতে থাকেন একদল লোক। চিকিৎসকের সঙ্গে তাঁর পরিবারের সদস্যদেরও মারধর করা হয়। তাঁদের মারে গৌরবের এক আত্মীয়ের মাথা ফেটে যায়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। তারা দ্রুত চিকিৎসককে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কাইকে গ্রেফতার করা হয়নি বলেই জানা গিয়েছে।
গৌরব বলেন,‘‘সকালে এক রোগী বুকে ব্যথা নিয়ে আমার কাছে আসেন। আমি তাঁকে দেখে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করার কথা বলি। কারণ, আমার কাছে হৃদ্রোগের চিকিৎসা করার মতো ব্যবস্থা ছিল না। অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। এর পরই একদল লোক এসে আমাদের বাড়িতে এসে ভাঙচুর চালায়।’’
ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে চিকিৎসকদের সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ চিকিৎসক ফোরাম (ডব্লুবিডিএফ)। খবর পেয়ে আক্রান্ত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে। সংগঠনের সদস্য চিকিৎসক কৌশিক চাকী বলেন, ‘‘নিমতার বিষয়টি আমরা স্বাস্থ্যসচিবকে জানিয়েছি। এই ধরনের ঘটনা যদি বাড়তে থাকে, তবে চিকিৎসকরাও পদক্ষেপে করতে বাধ্য হবেন।’’
হামলার পর লন্ডভন্ড হয়ে পড়ে রয়েছে জিনিসপত্র নিজস্ব চিত্র
সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম-এর সাধারণ সম্পাদক চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন,‘‘আমরা এই বর্বরোচিত আক্রমণের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। দোষীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’
চিকিৎসিক সংগঠনগুলির অভিযোগ, প্রথম থেকে পুলিশ ব্যবস্থা নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেত না। ফোরামের দাবি, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে, না হলে তারা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাবেন।