দমদমে দাঁড়িয়ে দুরন্ত এক্সপ্রেস। শনিবার সন্ধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
সকালে রাজধানী এক্সপ্রেসের যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হয়েছিলেন। দুপুরে দুর্ভোগে পড়লেন দুরন্ত এক্সপ্রেসের যাত্রীরা। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দেশের দু’-দু’টি প্রথম শ্রেণির সুপারফাস্ট ট্রেন এসে থমকে গেল দমদমে। তবে সকালে রাজধানী তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর শিয়ালদহ স্টেশনের দিকে রওনা হয়েছিল। কিন্তু দুরন্ত দুপুর ২টোর সময় দমদমে এসে দাঁড়ালেও সন্ধ্যে ৬টা পর্যন্ত সেখান থেকে আর একটুও এগোয়নি। প্রায় ৪ ঘণ্টার এই অপেক্ষায় অধৈর্য যাত্রীদের অধিকাংশই তাঁদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ-স্যুটকেস নিয়ে ট্রেন থেকে নেমে দমদম স্টেশনের দিকে রওনা হন। তবে যাঁরা তা করতে পারেননি, তেমন অনেকেই ট্রেনের ভিতরেই অপেক্ষারত।
শনিবার বিকানের থেকে শিয়ালদহে আসছিল এই দুরন্ত এক্সপ্রেস। সেই ট্রেনের শিয়ালদহে পৌঁছনোর কথা ছিল দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে। কিন্তু সেটি দমদমেই পৌঁছয় ২টো নাগাদ। তার পর থেকে এই প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার সময় পর্যন্ত ওই ট্রেন ছাড়েনি।
এই ঘটনার জন্য পুরোপুরি রেলের অব্যবস্থা এবং পূর্ব পরিকল্পনার অভাবকেই দায়ী করছেন যাত্রীরা। শুক্রবার থেকে শিয়ালদহ স্টেশনে ‘কর্মযজ্ঞ’ চলছে। যাত্রীস্বাচ্ছন্দ্য বাড়বে, এই যুক্তিতে শিয়ালদহের ১ থেকে ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণের কাজ চলছে। তার জেরে বদল আনা হয়েছে রেল পরিষেবায়। বাতিল হয়েছে বহু ট্রেন। বিপর্যস্ত দূরপাল্লার রেল পরিষেবাও। সকালে সেই দুর্ভোগের শিকার হয় রাজধানী। দুপুরে হল দুরন্ত এক্সপ্রেস।
দিল্লি-শিয়ালদহ রাজধানী এক্সপ্রেসের শিয়লদহে পৌঁছনোর কথা ছিল সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে। সেই মতো ঠিক সময়েই দমদমে এসে পৌঁছয় ট্রেনটি। সকাল ৯টা ২৫মিনিটে ট্রেন দমদম স্টেশেনর বাইরে এসে দাঁড়ায়। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে গেলেও ট্রেন চলার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি। ট্রেন কখন ছাড়বে বুঝতে না পেরে শেষ পর্যন্ত রেললাইনেই নেমে পড়েন যাত্রীরা। ভারী ব্যাগ-স্যুটকেস কেউ কাঁধে, কেউ পিঠে নিয়ে হাঁটতে শুরু করেন লাইন ধরে! শেষে দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে ছাড়ে ট্রেন। শিয়ালদহে পৌঁছয় দুপুর ১টা ২০ মিনিটে। তবে তত ক্ষণে বহু যাত্রী ভোগান্তির শিকার হয়েছেন।
দুরন্ত, রাজধানীর মতো দেশের প্রথম শ্রেণির সুপারফাস্ট ট্রেনে, যেখানে যাত্রীস্বাচ্ছন্দ্য এবং দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছনোর নিশ্চয়তা পেতে টিকিট কাটেন ট্রেনযাত্রীরা, সেই ট্রেনেই যাত্রীদের এই দুরবস্থা দেখে হতবাক সকলে। অব্যবস্থার জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছে পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ। সমালোচনা করেছেন খোদ রেলেরই প্রাক্তন কর্তা। তিনি বলেন, ‘‘শিয়ালদহে যে কাজ হচ্ছে তা পূর্বপরিকল্পিত। এই কাজের জন্য যে যাত্রীভোগান্তি হবে, তা জানা কথা। কিন্তু রাজধানীর মতো প্রেস্টিজিয়াস ট্রেনকে কেন এমন করা হল, বুঝতে পারলাম না। প্রয়োজনে তো আজকের জন্য ট্রেনটাকে হাওড়া ঢোকানো যেত!” তবে কার্যক্ষেত্রে রাজধানীর ক্ষেত্রে যেমন সেই ব্যবস্থা রাখা হয়নি, তেমনই দুরন্তের ক্ষেত্রেও হয়নি।