Heavy Rain

Transport in Kolkata: দুর্যোগে দেখা নেই বাসের, চড়া ভাড়া হাঁকল অটো-ট্যাক্সি

দান উল্টে দিয়ে গেল দুপুরের দুর্যোগ। যার জেরে বাড়ি পৌঁছতে নাস্তানাবুদ হলেন অফিস-ফেরত অসংখ্য মানুষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২১ ০৬:১৫
Share:

দুর্যোগ: দুপুেরর বৃষ্টি থামার পরে ধর্মতলায় যানবাহনের জন্য অপেক্ষা নিত্যযাত্রীদের ছবি: রণজিৎ নন্দী

মঙ্গলবারের তুলনায় বুধবার রাস্তায় বেসরকারি বাসের সংখ্যা খানিকটা বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোগান্তি একটু কমবে বলে আশা করেছিলেন নিত্যযাত্রীদের অনেকেই। কিন্তু দান উল্টে দিয়ে গেল দুপুরের দুর্যোগ। যার জেরে বাড়ি পৌঁছতে নাস্তানাবুদ হলেন অফিস-ফেরত অসংখ্য মানুষ।

Advertisement

বিকেলের পরে ঝড়-বৃষ্টি কমে এলেও দেখা যায়, বেসরকারি বাসের সঙ্গে রাস্তায় পাল্লা দিয়ে হ্রাস পেয়েছে সরকারি বাসের সংখ্যাও। এসপ্লানেড, রবীন্দ্র সদন, খিদিরপুর, রুবি মোড়, চিংড়িঘাটা, উল্টোডাঙা, বাগুইআটি, নিউ টাউন— প্রায় সর্বত্রই জনতার হয়রানি চোখে পড়েছে।

এ দিন উত্তর কলকাতার বিভিন্ন রুট মিলিয়ে পাঁচশোর কাছাকাছি বেসরকারি বাস রাস্তায় নেমেছিল। তবে বেহালা ও দক্ষিণ কলকাতায় বাসের সংখ্যা ছিল কম। অন্যান্য কিছু রুটেও বাস কমই নেমেছিল। ফলে ইএম বাইপাস, উল্টোডাঙা, চিংড়িঘাটা ও নিউ টাউন থেকে বাড়ি ফিরতে গিয়ে অনেককেই নির্ভর করতে হয়েছে শাটল ট্যাক্সি, ভিড়ে ঠাসা কিছু বেসরকারি বাস, অ্যাপ-ক্যাব, বাইক-ট্যাক্সি, এমনকি মালবাহী গাড়ির উপরেও।

Advertisement

হাওড়া, শিয়ালদহ, বালিগঞ্জ ও টালিগঞ্জের মতো একাধিক রেল স্টেশনে পৌঁছতে গিয়েও এ দিন জেরবার হতে হয়েছে জনতাকে। বিভিন্ন রুটে অটো পেতেও দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের। সন্ধ্যা গড়াতেই যেমন খুশি ভাড়া হেঁকেছেন চালকেরা। গড়িয়াহাটেও ছিল যাত্রীদের লম্বা লাইন।

সন্ধ্যার মেট্রো এবং রেলের স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনেও উপচে পড়েছে ভিড়। ওই ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে এক জন গুরুতর জখমও হন। এ দিন সকালের ব্যস্ত সময়ে পরিবহণ নিগমের প্রায় ৮৫০টি বাস পথে নেমেছিল। কিন্তু ঝড়-বৃষ্টির পরে তা অনেকটাই কমে আসে। সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য এবং আদালতের মতো জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের জন্য নির্ধারিত প্রায় ২০০ বাস আর নামানোই যায়নি।

সূত্রের খবর, এ দিন নিগমের সাতটি ডিপোয় তেলের ঘাটতি থাকায় বহু রুটেই বাস নামানো যায়নি। এমনকি, জমা জলে বিকল হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকায় ৭৫টি ইলেকট্রিক বাসকেও চালানো হয়নি। যার ফলে উত্তরে ডানলপ, চিড়িয়ামোড়, পূর্বে নিউ টাউন এবং দক্ষিণে বেহালা, জোকা ও গড়িয়ামুখী যাত্রীদের তুমুল হয়রানির মুখে পড়তে হয়। সন্ধ্যা হতেই অ্যাপ-ক্যাবের ভাড়া দেড় থেকে দ্বিগুণ পর্যন্ত বেড়ে যায়। বহু গলিতে ও রাস্তায় জল জমে থাকায় বাইক-ট্যাক্সির জোগানও এ দিন কম ছিল। ফলে, দেদার ভাড়া হেঁকেছে শাটল হলুদ ট্যাক্সি।

বারাসতের বাসিন্দা অভিজিৎ মণ্ডল সেক্টর ফাইভের বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মী। তাঁর কথায়, ‘‘দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করেও বাস না পাওয়ায় অটোয় প্রায় ৬০ টাকা খরচ করে উল্টোডাঙায় যাই। তার পরে ভিড়ে ঠাসা ট্রেনে ফিরতে হয়।’’ গড়িয়ার মহামায়াতলার বাসিন্দা শতরূপা গুপ্ত কসবার একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী। তাঁর কথায়, ‘‘অন্যান্য দিন যেখানে ১৬০-১৭০ টাকায় হয়ে যায়, এ দিন সেখানে ২৮৭ টাকা ভাড়া দিয়ে অ্যাপ-ক্যাবে ফিরতে হয়েছে।’’ ঠাকুরপুকুরের বাসিন্দা বিমল পুরকায়স্থ ভবানীপুরের একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী। তাঁর কথায়, ‘‘সরকারি বাস ছিল না। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার পরে টালিগঞ্জ থেকে অটো পেতে হিমশিম খেতে হয়েছে। এক ঘণ্টারও বেশি অপেক্ষা করে অটো পাই।’’

বেসরকারি বাসমালিক সংগঠন সূত্রের খবর, সোমবার থেকে রাস্তায় বাসের সংখ্যা অনেকটাই বাড়তে পারে। ‘‘বাস-মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু এ দিন বলেন, ‘‘অনেক বাসেই রক্ষণাবেক্ষণের অভাবজনিত সমস্যা রয়েছে। তা কিছুটা মিটলে সোমবার থেকে অনেক রুট সচল হবে।’’ ‘সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিস’-এর টিটু সাহা বললেন, ‘‘দক্ষিণের বিভিন্ন রুটে বিক্ষিপ্ত ভাবে বাস চলছে। আশা করছি, সোমবার থেকে বাসের সংখ্যা বাড়বে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement