সব পুড়ে ছাই। নিজস্ব চিত্র
শ্মশানের শান্তি। সব পুড়িয়ে খাক করে দেওয়ার পর এখন ছাইয়ের স্তূপ বাগবাজার বস্তিতে। সব কিছু চোখের সামনে পুড়ে যেতে দেখেছেন যাঁরা, সেই কয়েক’শো বস্তিবাসী শেষ সম্বলটুকু ছাইয়ের গাদায় খুঁজে চলেছেন। তাই বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তাঁরা হাজির হয়েছেন অগ্নিদগ্ধ বস্তির সামনে। ধ্বংসস্তুপ সরিয়েই তাঁরা পৌঁছে গিয়েছেন যে যার আস্তানায়। পুড়ে যাওয়া বাড়ি থেকে যদি বাঁচিয়ে আনা যায় গুরুত্বপূর্ণ নথি।
কারও আধার কার্ড, রেশন কার্ড, কোনও ছাত্রের সার্টিফিকেট— এমনই নানা গুরুত্বপূর্ণ নথি ফেলে রেখে প্রাণের দায়ে ছুটে বেরিয়ে আসতে হয়েছিল বাড়ি থেকে। সে সবের সন্ধানেই পোড়া বস্তিতে এক বুক আশা নিয়ে হাজির হয়েছেন তাঁরা। যদি লেলিহান শিখা থেকে বেঁচে থাকে সামান্য সম্বল... বুকে আগলে নিয়ে যাবেন বাগবাজার মহিলা কলেজের অস্থায়ী আস্তানায়। কিন্তু বেশির ভাগকেই ফিরতে হচ্ছে নিরাশ হয়ে। কারণ, আগুন গ্রাস করেছে সবই। কিছুই প্রায় অবশিষ্ট নেই। মেডিক্যাল রিপোর্ট থেকে পরিচয়পত্র, আগুন পুড়িয়েছে সব।
বৃহস্পতিবার সকালে সর্বস্বান্ত সেই সব মানুষেরা বাগবাজার বস্তির সামনে এলে সকাল থেকেই এলাকা ভিড়ে ছেয়ে যায়। পুলিশ রাস্তা সচল রাখতে ভিড় কমানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তাতে সব হারানোর যন্ত্রণা যেন আরও দ্বিগুণ ক্ষোভ হয়ে ফিরে আসে। স্থানীয়দের দাবি, গুরুত্বপূর্ণ নথির সন্ধানে তাঁরা সেখানে এসেছেন। কলকাতা পুরসভার মেয়র, ফিরহাদ হাকিম এসে সাহায্যের কথা বললেও পুলিশ একেবারেই সাহায্য করছে না। উল্টে তাঁদের সরে যেতে বলছে। সেই ক্ষোভ থেকে রাস্তা অবরোধও করেন তাঁরা।
পুলিশ যদিও বলছে, আটকাতে নয় সাহায্যের জন্য পুলিশ বাহিনী সেখানে এসেছেন। কাউকে আটকানোর কোনও প্রশ্নই ওঠে না, দাবি পুলিশের।
বুধবার সন্ধ্যায় হাজার বস্তি নামে পরিচিত বাগবাজার এলাকার ওই বস্তিতে আগুন লাগে। পুড়ে যায় অসংখ্য ঝুপড়ি। পর পর তীব্র শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের খবর আসতে থাকে। গঙ্গার ধারে হওয়ায় দ্রুই সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন:‘চোখের সামনেই রাক্ষুসে আগুনে সব শেষ’
আরও পড়ুন: গৃহহীন অনেকে, বাগবাজারের আগুন ছড়াল মায়ের বাড়িতেও