ছবি: সংগৃহীত
চিকিৎসকদের সব রকমের চেষ্টাই বিফলে গেল। বাঁচানো গেল না করোনা আক্রান্ত হয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকা রাখি মণ্ডল বিশ্বাসকে। মঙ্গলবার ভোরে মারা যান বনগাঁর বাসিন্দা ৩২ বছরের ওই বধূ। গত সোমবার ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থাতেই ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) অস্থায়ী অপারেশন থিয়েটার তৈরি করে ওই অন্ত্বঃসত্ত্বাকে সিজ়ারিয়ান পদ্ধতিতে প্রসব করিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতাল সূত্রের খবর, রাখির সদ্যোজাত কন্যাসন্তান এখন নিওনেটাল ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট (নিকু)-এ রয়েছে। তার লালারসের নমুনা পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছে। সেটি আসার পরেই বোঝা যাবে, ওই সদ্যোজাতও করোনা আক্রান্ত কি না।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে অস্ত্রোপচার হওয়ার পরেও প্রোনিং পদ্ধতিতে ভেন্টিলেশনে ছিলেন রাখি। প্রথম দিকে তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা প্রায় ৮০-৮৪ শতাংশ হয়েছিল। কিন্তু বিকেল থেকে ফের অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। অক্সিজেনের মাত্রা ৭০-৭৫ শতাংশে নেমে যায়। তখন চিকিৎসকেরা তাঁকে একমো সাপোর্ট দেওয়ার পরিকল্পনা করেন।
কিন্তু বিকেল ৪টে থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রাখিকে একমো সাপোর্ট দেওয়ার চেষ্টা হলেও, তা সম্ভব হয়নি। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, রোগীর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে রক্তচাপও দ্রুত কমছিল। সেই কারণেই বেশি ঝুঁকি নিয়ে একমো সাপোর্ট দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা যায়নি। প্রোনিং পদ্ধতিতে ভেন্টিলেশনেই রাখা হয় রাখিকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কথায়, “চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখা হয়নি। সন্তান প্রসব করালে যদি ফুসফুসের উপর একটু চাপ কম পড়ে, সেই জন্য সিজ়ারিয়ান পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও শেষরক্ষা হল না।’’ তবে ঠিক সময়ে অস্ত্রোপচার করায় রাখির গর্ভস্থ সন্তানকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি তাঁরা চিন্তা করছেন, বাড়িতে থাকা রাখির চার বছরের আর এক সন্তানকে নিয়ে।