সরকারী ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তির চাহিদা বাড়ছে। — ফাইল চিত্র।
স্কুলে স্কুলে শুরু হয়েছে ভর্তি প্রক্রিয়া। কলকাতা শহরের যে সব সরকারি স্কুলে বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যম একসঙ্গে রয়েছে, সেই সব স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, বাংলা মাধ্যমের পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যমেও ভর্তির চাহিদা এ বার বেশ বেশি। তাঁদের মতে, যদি ইংরেজি মাধ্যমের পরিকাঠামো বাড়ানো যায়, তা হলে চাহিদা আরও বাড়বে।
হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্ত যেমন জানালেন, সেখানে প্রাক্-প্রাথমিকে ইংরেজি মাধ্যমে ভর্তির আসন ৪০টি। শুক্রবার থেকে লটারির মাধ্যমে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শুভ্রজিৎ বলেন, “আবেদনের যা বহর দেখছি, তাতে মনে হচ্ছে, ১১০০ থেকে ১২০০টি ভর্তির আবেদন জমা পড়বে। ইংরেজি মাধ্যমে পড়ার জন্য যে এত আবেদন আসবে, তা ভাবতে পারিনি।” শুভ্রজিৎ জানান, তাঁদের স্কুলে প্রাক্ প্রাথমিকে ইংরেজি মাধ্যমে চার জন শিক্ষক আছেন। আরও শিক্ষকের প্রয়োজন হলে বাংলা মাধ্যমের শিক্ষকেরাই পড়ান। প্রাক্ প্রাথমিকের পড়ুয়ারা যখন মাধ্যমিক স্তরে যাবে, তখন তাদের ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর জন্য আরও শিক্ষকের প্রয়োজন হবে।
শিয়ালদহের টাকি বয়েজ়ের প্রধান শিক্ষিকা স্বাগতা বসাক জানান, তাঁদের স্কুলে ভর্তির লটারি হবে। প্রাক্ প্রাথমিকে ইংরেজি মাধ্যমে ৫০টি আসনের জন্য এখনও পর্যন্ত ২০০টি আবেদনপত্র জমা পড়েছে। স্বাগতা বলেন, “আমাদের স্কুলে প্রাক্ প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক— দু’টি স্তরেই ইংরেজি মাধ্যম রয়েছে। তবে প্রথম ভাষা বাংলা। দ্বিতীয় ভাষা ইংরেজি। ফলে ইংরেজি মাধ্যমের পড়ুয়াদের বাংলাটা পড়তে হচ্ছে।” তবে স্বাগতা জানান, প্রাথমিকে ইংরেজি মাধ্যমের জন্য আলাদা শিক্ষক থাকলেও মাধ্যমিক স্তরে ইংরেজি মাধ্যমের জন্য বাংলা মাধ্যমের শিক্ষকদের দিয়েই কাজ চালাতে হচ্ছে। মাধ্যমিক স্তরে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষক পেলে খুব ভাল হয়।
যাদবপুর বিদ্যাপীঠ লটারির মাধ্যমে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি নিচ্ছে। প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য জানালেন, ইংরেজি মাধ্যমে মোট ৬০টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে ৪৩ জন আসবে প্রাথমিক স্কুল থেকে। বাকি ১৭ জনকে নেওয়া হবে লটারির মাধ্যমে। পার্থপ্রতিম বলেন, “ইংরেজি মাধ্যমে ভর্তির চাহিদা খুব বেশি। ১৭টি আসনের জন্য ৩৫০টি আবেদনপত্র জমা পড়েছে।”
ইংরেজি মাধ্যমে ভর্তির চাহিদা এতটা বেশি কেন? শিক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, এমন অনেক অভিভাবক আছেন, যাঁদের ছেলেমেয়েদের ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর সাধ থাকলেও সাধ্য থাকে না। তাই তাঁরা বাচ্চাদের সরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়াতে চাইছেন। বছরে ২৪০ টাকা দিলেই বাংলা মাধ্যমের মতো ইংরেজি মাধ্যমেও পড়ানো যাবে। ইংরেজি মাধ্যমে পড়লে পরবর্তীকালে সর্বভারতীয় পরীক্ষা দিতেও সুবিধা হবে। তবে অভিভাবকেরা মনে করছেন, সরকারি স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমের পরিকাঠামো আরও ভাল হওয়া দরকার।