—প্রতীকী চিত্র।
কারও একটাও লাইসেন্স নেই, কারও লাইসেন্স রয়েছে কিন্তু জলে ব্যাক্টিরিয়া। এমন ৯টি সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কলকাতা পুরসভার খাদ্য সুরক্ষা দফতর। সোমবার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ এই ‘হুমকি’ দিয়ে জানান, ভেজাল জল বিক্রি বন্ধ করতে কঠোর হতে চায় পুর প্রশাসন।
কিন্তু মামলার মতো দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়ায় কঠোর সাজার সম্ভাবনা কতটা এবং কত দিনে তা কার্যকর হবে তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে পুরসভার অন্দরেই। এ নিয়ে প্রশ্ন করতেই অতীনবাবুর জবাব, ‘‘খাদ্য নিরাপত্তার আইনে আমাদের ক্ষমতা সীমিত। তাই পুলিশের সাহায্য নিয়ে ভেজাল কারবার রুখতে হবে।’’ সেই জন্যই বুধবার কলকাতা পুরভবনে পুলিশ, রাজ্য প্রশাসন, ফুড সেফটি দফতর এবং এনফোর্সমেন্ট শাখার পদস্থ অফিসার-সহ আরও কিছু সংস্থাকে নিয়ে বৈঠক হবে। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ওই বৈঠকেই জল-সহ আরও নানা ভেজাল খাবারের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশিকা প্রস্তুত করা হবে। তবে প্রশ্ন উঠেছে, মামলা তো দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। তত দিন ওই জল বিক্রি আটকানো নিয়ে পুরসভা কি কোনও ব্যবস্থা নেবে? এ দিন অবশ্য এই প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।
দক্ষিণ কলকাতায় সম্প্রতি আন্ত্রিকের প্রকোপ বাড়ায় পুরসভার জলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। বহু ক্ষেত্রে পুরসভার জল পরীক্ষায় দেখা যায় তা খাওয়ার অযোগ্য। যদিও মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় প্রথম থেকেই বলে যাচ্ছিলেন পুরসভার জল নিরাপদ। বোতলবন্দি জলেও কিছু ক্ষেত্রে কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়া মেলে। এর পরেই পুরসভার নজর পড়ে বোতলবন্দি জলের উপরে।
অতীনবাবু জানান, ক’দিন ধরে এনফোর্সমেন্ট শাখা এবং ফুড সেফটি দফতর ২২টি ওয়ার্ডে বোতলবন্দি জল নিয়ে অভিযান চালায়। বোতলে জল বিক্রি করতে হলে ফুড লাইসেন্স, ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড ও পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হয়। কিন্তু দেখা গিয়েছে, ২১টি সংস্থার লাইসেন্সই নেই। ৯টি সংস্থার জলে দূষণ মিলেছে। রাজ্য সরকারের একটি সংস্থা-সহ আরও দুই নামী সংস্থার জলে কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়া পাওয়া গিয়েছে।
সোমবার একটি নামী জল প্রস্তুতকারক সংস্থার প্রতিনিধি মেয়র পারিষদকে জানান, তাঁদের স্টিকার নকল করে জল বিক্রি চলছে। ওই সংস্থার তৈরি জলও পুরসভা পরীক্ষা করে দেখবে বলে জানা গিয়েছে।