যার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘রাস্তায় ডিউটি করা পুলিশকর্মীদের নজর এড়িয়ে অনেক ক্ষেত্রে বিধিভঙ্গের ঘটনা ঘটে। তা বন্ধ করতেই এমন পদক্ষেপ।’’
ফাইল চিত্র।
ট্র্যাফিক বিধিভঙ্গ রুখতে কয়েকশো ক্যামেরা তো আছেই। সেই সঙ্গে প্রতিদিন শহরের রাস্তায় নেমে নজরদারি চালান কয়েক হাজার পুলিশকর্মী ও আধিকারিক। কিন্তু তা সত্ত্বেও অনেক সময়ে তাঁদের চোখ এড়িয়েই ট্র্যাফিক আইন ভাঙার ঘটনা ঘটে। তবে মানব-চোখ এড়ালেও বিধি-ভাঙা গাড়ি বা তার চালক যাতে ক্যামেরার চোখকে কোনও ভাবেই এড়াতে না পারেন, তার জন্য লালবাজারের ট্র্যাফিক কন্ট্রোল রুমে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত কর্মী। এ ছাড়া প্রতি শিফটেও কর্মীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে বলে কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর।
কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের পথে নজরদারির জন্য এখন প্রায় ১৭০০ ক্যামেরা রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ১২০টি অটোম্যাটিক নম্বর প্লেট রেকগনিশন (এএনপিআর) এবং রেড লাইট ভায়োলেশন ডিটেকশন (আরএলভিডি) ক্যামেরা। এ ছাড়া, প্রতিদিন পথে নজরদারি চালান কয়েক হাজার পুলিশকর্মী। পুলিশ সূত্রের খবর, লালবাজারে কন্ট্রোল রুমে বসেই ক্যামেরার ফুটেজে লক্ষ রাখেন আধিকারিকেরা। ট্র্যাফিক আইন ভাঙার চিত্র কোথাও ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গাড়িটি চিহ্নিত করে তার নম্বর পাঠিয়ে দেওয়া হয় ট্র্যাফিক কম্পিউটার সেলে। সেখান থেকে এসএমএস যায় গাড়ির মালিকের মোবাইলে। ২৪ ঘণ্টা চলে এই নজরদারি। জানা গিয়েছে, আগে তিনটি শিফটে ১৫ জন করে পুলিশকর্মী কন্ট্রোল রুমে বসে ক্যামেরায় নজরদারির এই কাজ করতেন। এখন সেই সংখ্যা বাড়িয়ে প্রতি শিফটে ৩০-৩২ জন কর্মী রাখা হচ্ছে। শুধুমাত্র এই কাজের জন্য অতিরিক্ত ২৪ জন কর্মীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ট্র্যাফিক-বিধি ভঙ্গে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে আরও কড়া হয়েছে কলকাতা পুলিশ। জরিমানার অঙ্ক বাড়ানোর পাশাপাশি বেপরোয়া গাড়িচালকদের শায়েস্তা করতে সর্বাধিক তিন মাসের জন্য লাইসেন্স সাসপেন্ড করার পথেও হাঁটছে তারা। যার ফলও মিলতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, জানুয়ারির তুলনায় ফেব্রুয়ারিতে ট্র্যাফিকের মোট মামলার সংখ্যা কমেছে প্রায় ৮৫ হাজার।
তবে মোট মামলার সংখ্যা ফেব্রুয়ারিতে কমলেও মোটরযান আইনের ১৮৩ নম্বর ধারায় (অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানো) ব্যবস্থা নেওয়ার সংখ্যা ওই মাসে বেড়েছে প্রায় ১৯ হাজার। পুলিশের এই নজরদারির প্রসঙ্গে এক গাড়িচালক বলেন, ‘‘পথের
নিরাপত্তা বাড়াতে এমন নজরদারি অবশ্যই সাধুবাদযোগ্য। আমরা সকলেই নিরাপদ রাস্তা চাই। কিন্তু একই সঙ্গে এই নজরদারি চালাতে গিয়ে অকারণে যাতে জরিমানা সংক্রান্ত এসএমএস না আসে, সে দিকেও লক্ষ রাখতে হবে পুলিশকে।’’
যার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘রাস্তায় ডিউটি করা পুলিশকর্মীদের নজর এড়িয়ে অনেক ক্ষেত্রে বিধিভঙ্গের ঘটনা ঘটে। তা বন্ধ করতেই এমন পদক্ষেপ।’’
কিন্তু এত কড়াকড়ির পরেও শহরের রাস্তায় দুর্ঘটনা কমবে কি? সেটাই এখন দেখার।