JU Student Death

হস্টেলের গেটে পুলিশকে ‘আটকানো’ জয়দীপকে ২৪ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতেই পাঠাল কোর্ট

জয়দীপ ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক’ বিভাগের ছাত্র ছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে। তিনি এখন বিক্রমগড়ের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২৩ ১৫:২৮
Share:

রবিবার আলিপুর আদালতে হাজির করানো হল যাদবপুরকাণ্ডে ধৃত জয়দীপ ঘোষকে। — নিজস্ব চিত্র।

২৪ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে থাকবেন যাদবপুরকাণ্ডে ধৃত প্রাক্তনী জয়দীপ ঘোষ। রবিবার জানাল আলিপুর আদালত। শনিবারই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী জয়দীপকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। অভিযোগ, প্রথম বর্ষের ছাত্রটি যে রাতে তিন তলা থেকে পড়ে গিয়েছিল, সেই রাতে পুলিশকে হস্টেলে ঢুকতে বাধা দিয়েছিলেন জয়দীপ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রের কাছে গিয়ে পুলিশকে বয়ান রেকর্ড করতেও বাধা দিয়েছেন তিনি বলে অভিযোগ।

Advertisement

সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল আদালতের বাইরে বেরিয়ে বলেন, ‘‘ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৩ ধারায় (সরকারি কর্মীকে কাজে বাধা) মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত দু’ভাবে বাধা দিয়েছেন। এক, ছাত্র পড়ে যাওয়ার পর হস্টেলের গেট বন্ধ রেখেছিলেন। দুই, আক্রান্তকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন পুলিশকে সামনে গিয়ে বয়ান নিতে দেননি। কথা বলতে দেননি।’’ সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, জয়দীপের সঙ্গে আরও কয়েক জন ছিলেন সে সময়। কী উদ্দেশে জয়দীপ এ সব করেছেন, তা জানার জন্য পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।

রবিবার জয়দীপের আইনজীবী আদালতে জানিয়েছেন, ওই ছাত্র হস্টেলের বারান্দা থেকে পড়ে যাওয়ার পর থানায় দু’জন এসে ঘটনার কথা জানিয়েছিলেন। পাল্টা সরকারি আইনজীবী বলেন, যখন পুলিশ আক্রান্তের কাছে গিয়েছিল, তখন পৌঁছতে দেওয়া হয়নি। জয়দীপের বিরুদ্ধে ছাত্রের বয়ান রেকর্ড করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এর পরেই জয়দীপের ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন করা হয়। সরকারি আইনজীবীর তরফে জানানো হয়, ছাত্রের পড়ে যাওয়ার পর কী কী প্রমাণ নষ্ট করা হয়েছে, তা দেখতে হবে। সেই আবেদনই মঞ্জুর করেছে আলিপুর আদালত।

Advertisement

এখন পর্যন্ত যাদবপুরকাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছেন ১৩ জন। জয়দীপ ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক’ বিভাগের ছাত্র ছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামে। তিনি এখন বিক্রমগড়ের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন।

গত ৯ অগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলের এ-২ ব্লকের তিন তলার বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে প্রথম বর্ষের এক পড়ুয়ার মৃত্যু হয়। অভিযোগ উঠেছিল, সেই রাতে পুলিশকে হস্টেলে ঢুকতে বাধা দিয়েছেন হস্টেলের আবাসিকদের একাংশ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই জয়দীপকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার জয়দীপকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার পর রাতের দিকে গ্রেফতার করা হয় ওই প্রাক্তনীকে। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে জয়দীপের বিরুদ্ধে।

পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন রাত ১২ নাগাদ দু’জন যাদবপুর থানায় আসেন। তাঁরা নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং হস্টেলের আবাসিক বলে পরিচয় দেন। তাঁরা জানান, তার কিছু ক্ষণ আগে এক জন পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন। এর পরেই যাদবপুর থানার পুলিশ হস্টেলের উদ্দেশে রওনা দেয়। গেটের কাছে গিয়ে পুলিশকর্মীরা জানতে পারেন, এক জনকে জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর পরে পুলিশ হস্টেলে ঢুকতে চাইলে তাদের বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যাঁরা পুলিশকে হস্টেলে ঢুকতে বাধা দিয়েছিলেন সেই রাতে, তাঁদের মধ্যেই জয়দীপ অন্যতম। পুলিশকে বাধা দেওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে পৃথক মামলাও রুজু হয়। সেই মামলায় চার জনকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় শনিবার। তার পরেই জয়দীপকে গ্রেফতার করা হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement