বেহাল: কাঁচা রাস্তায় জল জমে এমনই হাল। শনিবার, হাওড়ায় আড়ুপাড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
এ যেন নরক!
পাঁকগোলা কালো জল জমে রয়েছে ভাঙাচোরা রাস্তায়। অলিগলিও ভাসছে সেই জলে। গোটা এলাকায় নিকাশি বলতে যে ব্যবস্থা আছে, তা কাঁচা নর্দমাকেও হার মানায়। এক সময়ের পাকা নর্দমা সংস্কারের অভাবে ভেঙে একাকার অবস্থা। ফলে জল বেরোনোর পথ না পেয়ে জমছে রাস্তায়।
এক দিকে, যখন পুলিশ অ্যাকাডেমি হচ্ছে, বহুতল গজিয়ে উঠছে ওই এলাকায়, তখন এমনই ছবি দেখা গেল ৪৭, ৪৮ এবং ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডগুলির সীমান্ত লাগোয়া বালিটিকুরি ঘোষপাড়ার উত্তর আড়ুপাড়ায়। বৃষ্টি তো নেই, তবে এত জল কেন? পুরসভা সূত্রের খবর, ওই রাস্তার কেএমডিএ-র পানীয় জলের পুরনো পাইপ চার জায়গায় ফেটে গিয়েছে। ফলে জল ফোয়ারার মতো মিশছে নর্দমা উপচানো পাঁকগোলা জলে। বাসিন্দারা আন্ত্রিকের আতঙ্কে জল কিনে খাচ্ছেন। তাঁদের অভিযোগ, যখনই দুপুর ও রাতে জল সরবরাহ হচ্ছে তখনই ভাসছে গোটা এলাকা।
স্থানীয় দোকানদার খোকন ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা এলাকা থেকে বারবার চিঠি দিয়েছি পুরসভায়। পুরসভা পাইপের একটা ফুটো সারিয়ে যাওয়ার পরে ফের অন্য জায়গায় ফাটল ধরছে। ফলে সমস্যা থেকেই যাচ্ছে।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এক বছর ধরে পুর নির্বাচন না হওয়ায় কার্যত অনাথ সংযুক্ত এলাকার এই তিনটি ওয়ার্ড। সব থেকে বড় কথা, আড়ুপাড়া এলাকা ৪৭, ৪৮ ও ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের সীমানা হওয়ায় ভাগের মায়ের মতো অবস্থা হয়েছে। পরিস্থিতির জন্য কেউ দায় নিতে চাননি। বাসিন্দাদের দাবি, কলকাতা পুলিশ অ্যাকাডেমি তৈরি হবে বলে দীর্ঘদিন ধরে থাকা কাঁচা রাস্তা কংক্রিটের হয়েছে বছর কয়েক আগে। না হলে বর্ষাকালে ভয়াবহ অবস্থা হত আড়ুপাড়ার ওই রাস্তার। বর্তমানে সেই রাস্তায় যোগ হয়েছে পাইপলাইনের ছিদ্রের সমস্যা।
এক বাসিন্দা দিলীপ পাত্র বলেন, ‘‘মাস ছয়েক আগে কেএমডিএ জলের পাইপ বসাতে গিয়ে রাস্তা খোঁড়ে। ফলে রাস্তা হাঁটাচলার অনুপযুক্ত হয়ে যায়।’’ বাসিন্দাদের অভিযোগ, জমা জল মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ওই জলে মশার বংশবৃদ্ধি হচ্ছে। ভাঙা রাস্তায় দুর্ঘটনাও ঘটছে। সম্প্রতি সেখানে পড়ে পা ভেঙে শয্যাশায়ী দীপককুমার দেয়াশী নামে এক ৭২ বছরের বৃদ্ধ।
এ প্রসঙ্গে পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘পুরনো পাইপ বারবার ফাটছিল। তাই পাইপ বদলানোর জন্য পুরসভা কেএমডিএ-কে জানিয়েছিল। সেই কাজই চলছে। ওই কাজ শেষ হলেই রাস্তা মেরামত করা হবে।’’