ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে দক্ষিণ দমদম পুর এলাকার বান্ধবনগরের বাসিন্দা দুই বালিকার। ওই ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়েছে পুরসভায়। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, জমা জল বা গোটা বাতিস্তম্ভ বিদ্যুৎবাহী হয়ে মৃত্যু নয়, সম্ভবত বাতিস্তম্ভের খোলা অংশের ভিতরের তারে হাত পড়েই এমন অঘটন ঘটে।
মঙ্গলবার দক্ষিণ দমদম পুরসভার মুখ্য প্রশাসক জানান, ওই ঘটনার পরেই এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। যথাসময়ে সেই কমিটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গিয়েছে, গোটা বাতিস্তম্ভ বা সামনের জমা জল বিদ্যুদয়িত হয়ে উঠেছিল, এমন প্রমাণ মেলেনি। তবে ওই বাতিস্তম্ভের ঢাকনা খোলা ছিল। সেই অংশের তারের সঙ্গে হাতের স্পর্শেই এই ঘটনা বলে অনুমান। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, কেন বাতিস্তম্ভের ঢাকনা খোলা ছিল, রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা সংস্থাকে এর কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে পুর কর্তৃপক্ষের মতে, বহু বাতিস্তম্ভ থেকেই লোহার ঢাকনা উধাও হয়ে গিয়েছে। সম্ভবত ছিঁচকে চোরের উপদ্রবেই এমন অবস্থা।
বাসিন্দাদের বক্তব্য, যে কারণেই ঢাকনা উধাও হয়ে যাক, বাতিস্তম্ভের নজরদারি এবং রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পুরসভারই। সেটা যে নেই, দুই বালিকার মৃত্যুর ঘটনায় তা প্রমাণিত। পুর কর্তৃপক্ষের কাছে অবিলম্বে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান চান তাঁরা। পুরসভা জানিয়েছে, কতগুলি বাতিস্তম্ভ ঢাকনাহীন, তা চিহ্নিত করে অস্থায়ী ভাবে সেগুলি ঢাকা দেওয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে। এর পরে লোহার পরিবর্তে প্লাস্টিকের ঢাকনা ব্যবহার করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। তা ছাড়া বাতিস্তম্ভের এমন উচ্চতায় ঢাকনা রাখতে হবে, যাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে সহজেই কেউ হাত না দিতে পারেন।
পুরসভার দাবি, যে সব বাতিস্তম্ভের ঢাকনা খোলা আছে, ইতিমধ্যেই সেগুলির বেশির ভাগ সেলোটেপ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ দমদম পুর এলাকার বাতিস্তম্ভগুলির সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার পুর কর্তৃপক্ষ এবং সিইএসসি কর্তৃপক্ষের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডে বাতিস্তম্ভের অবস্থা যৌথ ভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে সিইএসসি কর্তৃপক্ষ আগেই জানিয়েছেন, বাতিস্তম্ভ বসানো এবং সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট পুরসভার। সিইএসসি শুধুমাত্র সংযোগ দেওয়ার কাজটুকু করে। সংযোগ কখন দেওয়া হবে বা বন্ধ করা হবে, তা সংশ্লিষ্ট পুরসভার সিদ্ধান্ত।
দমদম পুর এলাকাতেও এমন ঢাকনা খোলা বাতিস্তম্ভ নজরে পড়ছে। পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য বরুণ নট্ট জানাচ্ছেন, বাতিস্তম্ভের বিষয়ে ইতিমধ্যেই পুরসভার আলো বিভাগ এবং সিইএসসি-র সঙ্গে কথা হয়েছে। যে সব বাতিস্তম্ভের ঢাকনা খোলা দেখা গিয়েছে, সেগুলি দ্রুত ঢাকা হবে।