ফের বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু শহরে। প্রতীকী ছবি।
বিশ্বকর্মা পুজোর আগে কারখানার পাখা পরিষ্কার করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক যুবকের। শুক্রবার রাতে, নিউ মার্কেট এলাকার উমা দাস লেনের ঘটনা। মৃতের নাম রোহিত শর্মা (২২)। ওই রাতেই ভিআইপি রোডের উপরে কেষ্টপুর ও নারায়ণতলার মাঝে বিপজ্জনক গতিতে আসা একটি মোটরবাইক গাড়ির পিছনে ধাক্কা মারলে মৃত্যু হয় বাইকচালকের। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সুখদেব গায়েন (২১)। ওই দুর্ঘটনায় আহত হন বাইকের অপর আরোহী। এ ছাড়া, শনিবার সকালে আরও দু’টি পথ দুর্ঘটনায় মোট ছ’জন আহত হন।
পুলিশি সূত্রের খবর, উমা দাস লেনে রোহিতের বাবা রাজকুমার শর্মার ফল্স সিলিংয়ের সামগ্রী তৈরির কারখানায় শনিবার বিশ্বকর্মা পুজো হওয়ার কথা ছিল। তার আগে সেখানেই পাখা পরিষ্কার করার সময়ে পাখার সঙ্গে লাগানো একটি বিদ্যুতের তার রোহিতের মাথায় লাগে। কারখানার মেঝেতে সে সময়ে লোহার শিট ছড়ানো ছিল। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছিটকে পড়েন রোহিত। দ্রুত তাঁকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত ঘোষণা করা হয়। ময়না তদন্তের পরে মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেয় পুলিশ। এর জেরে কারখানায় পুজো বন্ধ হয়ে যায়। রোহিতের দেহ নিয়ে বিহারে চলে যায় ওই পরিবার। রোহিতের মা পিঙ্কি কথা বলার অবস্থায় নেই। রাজকুমার ফোনে বলেন, ‘‘পুজোর আগের দিন এমন ঘটবে ভাবিনি। গত বছর দুর্ঘটনায় ছোট ছেলে আনন্দকে হারিয়েছি। বড় ছেলেও আর রইল না।’’
পুলিশ জানায়, কেষ্টপুরের কাছে দুর্ঘটনায় মৃত সুখদেব বিধাননগরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের জগৎপুরের শিমুলতলার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি একটি খাবার সরবরাহকারী সংস্থায় চাকরি করতেন, পাড়ায় মশার তেল ছড়ানোর কাজও করতেন। ঘটনার রাতে লেক টাউনের দিক থেকে তিনি অপর এক যুবককে পিছনে বসিয়ে ফিরছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বাইকের গতি অত্যধিক বেশি ছিল। দুর্ঘটনার পরে দু’জনকে আর জি করে নিয়ে যাওয়া হলে সুখদেবকে মৃত ঘোষণা করা হয়। তাঁরা মত্ত ছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পাশাপাশি, শনিবার একটি ছোট মালবাহী লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় পড়লে তিন জন আহত হন। এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বৃষ্টির মধ্যে লরিটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পর পর দু’টি মোটরবাইকে ধাক্কা মারে। এর পরে ধাক্কা মারে এক জন সাইকেলচালক এবং দু’জন পথচারীকে। নরেন্দ্রপুর থানার গঙ্গাজোয়ারা রোডের এই ঘটনায় সকলকেই দ্রুত বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসার পরে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হলেও দুই মোটরবাইক আরোহী রাত পর্যন্ত সেখানেই চিকিৎসাধীন। পুলিশি সূত্রের খবর, লরিটি চালাচ্ছিল এক নাবালক। তাকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঠিক কী ভাবে ঘটনাটি ঘটল, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অন্য দিকে, এ দিন ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ একটি হ্যাচব্যাক গাড়ি দ্রুত গতিতে এসে শোভাবাজার এলাকায়, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের উপরে লাল মন্দিরে ধাক্কা মারে। ধাক্কায় গাড়িটির সামনের অংশ ভেঙে ভিতরে ঢুকে যায়। পুলিশের দাবি, গাড়িটির গতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটারেরও বেশি ছিল। তবে এয়ার ব্যাগের জোরে বেঁচে গিয়েছেন বছর তিরিশের চালক। তাঁকে আর জি করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁর পরিবারের লোকজন তাঁকে অন্যত্র নিয়ে যান। একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে শ্যামপুকুর থানার পুলিশ। মন্দিরের বদলে গাড়িটি ফুটপাতে উঠে গেলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, সেখানে অনেকেই রাতে ফুটপাতে শুয়ে থাকেন। গাড়িচালকের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ।