লড়াকু: এসএসকেএমে শুয়েই পরীক্ষা দিচ্ছেন আমিনুর ইসলাম, লিখছেন রাইটার। সোমবার। নিজস্ব চিত্র।
দুর্ঘটনায় ঘাড়ের তিনটি হাড় ভেঙেছে। ভেঙেছে ডান হাত, বাঁ পায়ের হাড়ও। কিন্তু সেই দুর্ঘটনা ভাঙতে পারেনি বছর আঠারোর তরুণের মনের জোর। সেই মনের জোরেই এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা কেয়ারে শুয়ে পরীক্ষা দিলেন আলিমের পরীক্ষার্থী। এ ভাবে বাকি পরীক্ষাগুলিও দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন দেগঙ্গার আমিনুর ইসলাম।
গাড়িতে করে বাড়ি থেকে সাত কিলোমিটার দূরের পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতেন আমিনুর। তবে ২ মার্চ গিয়েছিলেন মোটরবাইকে। ফেরার পথে একটি ভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কায় ছিটকে পড়েন তিনি। স্থানীয় হাসপাতালে পরীক্ষা করে দেখা যায়, আমিনুরের শরীরের তিন জায়গার হাড় ভেঙেছে। তাঁর দাদা মিনাজুর রহমান বলেন, ‘‘এমন অবস্থা দেখে ভাইকে পরীক্ষা দিতে বারণ করেছিলাম। কিন্তু ও রাজি হয়নি। ভাই পড়াশোনায় খুব ভাল। তাই আর অমত করিনি।’’ ওই হাসপাতালে শুয়েই একটি পরীক্ষা দেন আমিনুর। এর পরে অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাঁকে পিজির ট্রমা কেয়ারে আনা হয়।
গত ৪ মার্চ রাতে আমিনুরকে পিজির ট্রমা কেয়ারের ‘ইয়েলো জ়োন’-এ ভর্তি করা হয়। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন তিনি। বিষয়টি জানানো হলে পিজি কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা দেওয়ানোর ব্যবস্থা করেন। সেই মতো এ দিন কার্ডিয়াক মনিটর লাগানো অবস্থায় ‘হাদিস’ বিষয়ের প্রশ্নের উত্তর বলে গেলেন আমিনুর, আর তা লিখলেন ‘রাইটার’। ছিলেন পরিদর্শকও। পরীক্ষার মধ্যেই ইঞ্জেকশন নিতে হল আমিনুরকে। রাইটারকে বললেন, ‘‘ভাই, হাত চালান। সব উত্তর লিখতে হবে।’’