প্রতীকী ছবি।
পণের দাবি নেই জানিয়ে ছেলের বিয়ে ঠিক করত মা। পরে নানা কারণ দেখিয়ে পাত্রীপক্ষের থেকে মোটা টাকা ‘ঋণ’ হিসাবে নিত। তার পরেই মোটা টাকা পণ চেয়ে আসরে নামত পাত্র। পাত্রীপক্ষ সেই টাকা দিতে না চাইলে বিয়ে ভেঙে ‘ঋণের’ টাকা গায়েব করে দিত মা-ছেলে। তিন বার একই কায়দায় কয়েক লক্ষ টাকা জালিয়াতি করার পরে অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল পাত্রের মা। তবে পলাতক পাত্র। সে পেশায় বায়ুসেনার গাড়িচালক।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম সীমা সিংহ। তাকে বুধবার ব্যারাকপুরের লাটবাগানের পুলিশ কোয়ার্টার্স থেকে ধরে চারু মার্কেট থানার পুলিশ। ধৃতকে বৃহস্পতিবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত হয়। অভিযুক্ত ‘পাত্র’ চন্দন সিংহ কর্মসূত্রে অসমের তেজপুরে থাকে। গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে বুধবার পুলিশের একটি দল সেখানে গেলেও চন্দনের খোঁজ মেলেনি। পুলিশ অভিযুক্তদের তিনটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করেছে, যাতে লক্ষাধিক টাকা রয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত জুলাইয়ে টালিগঞ্জ রোডের এক বাসিন্দা চারু মার্কেট থানায় অভিযোগ করেন, ব্যারাকপুরের রবীন্দ্রনাথ সিংহের ছেলে চন্দনের সঙ্গে তাঁর মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথ রাজ্য পুলিশের কর্মচারী, তিনি পক্ষাঘাতগ্রস্ত। পণ নেবেন না, পাত্রের মা এ কথা জানানোর পরেই বিয়ের কথা পাকা হয়। এর পরে তারা জানায়, তাদের টাকা অন্য জায়গায় আটকে গিয়েছে। তাই বিয়ের জন্য প্রায় ৯ লক্ষ টাকা ঋণ দিতে অনুরোধ করে অভিযুক্তেরা। অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকার পরেই চন্দন জানায়, মোটা টাকা, গাড়ি ও অন্য দামি জিনিস পণ হিসাবে না দিলে বিয়ে করবে না সে। অভিযোগ, বিয়ের আশীর্বাদ উপলক্ষে সোনার গয়নাও হাতিয়েছে অভিযুক্তেরা।
পুলিশ জানায়, পাত্রীপক্ষ দ্বিতীয় বার টাকা দিতে না চাওয়ায় বিয়ে ভেঙে দেয় অভিযুক্তেরা। ঋণের টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করে মা-ছেলে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ।
তদন্তকারীরা জানান, চন্দনকে ডেকে পাঠানো হলে সে চিঠি পাঠিয়ে দাবি করে, অভিযোগকারী তার থেকেই ঋণ নিয়েছে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা যায় সেই দাবি মিথ্যে। এর পরেই আদালতের অনুমতি নিয়ে প্রতারণার সঙ্গে জালিয়াতির ধারা যুক্ত করা হয়।
এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, ‘‘আরও দু’জনের থেকে একই কায়দায় টাকা হাতিয়েছে অভিযুক্তেরা। পরের ‘টার্গেট’ও তৈরি ছিল।’’