দখল: এ ভাবেই তৈরি মেট্রো স্টেশন নিয়ে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র
আদিগঙ্গার উপরে পিলার তৈরি করা হলে পরিবেশের উপরে তার কী প্রভাব পড়বে, সেই সংক্রান্ত ‘এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট’ (ইআইএ) করা হয়েছিল কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। যদি হয়েও থাকে, সেই রিপোর্ট জাতীয় পরিবেশ আদালতে জমা করুন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। আদিগঙ্গা সংক্রান্ত মামলায় পরিবেশ আদালতে হলফনামা দিয়ে এমনটাই জানালেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। আগামী সোমবার পরিবেশ আদালতে সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা।
সুভাষবাবুর আরও দাবি, আদিগঙ্গার উপরে মেট্রোর পিলার তৈরি নিয়ে সেই ২০০১ সালেই তিনি বিরোধিতা করেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, আদিগঙ্গার মধ্যে দিয়ে টি-আকৃতির পিলার হলে জলের স্রোত বাধা পাবে। পরিবর্তে আদিগঙ্গার দু’পাশে পিলার তুলে প্রকল্পের কাজ করা হোক। কিন্তু জনস্বার্থ জড়িত বলে কলকাতা হাইকোর্ট মেট্রোকে অনুমোদন দেয়। কিন্তু এটাও নির্দেশ দেয় যে, পুরো কাজটি করতে হবে পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে। এমনকি, আদিগঙ্গার উপরে এ রকম কাজে পরিবেশগত কী প্রভাব পড়তে পারে, তা নিয়ে একটি ইআইএ করার কথাও আদালত বলেছিল বলে সুভাষবাবু জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘২০০১ সালে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে বলেছিলাম, আদিগঙ্গার উপরে মেট্রোর পিলার হলে স্রোত বাধা পাবে। হাইকোর্ট সেই অনুযায়ী পরিবেশগত সমীক্ষার কথা বলেছিল। সেই সমীক্ষা আদৌ হয়েছে কি না, সেটাই আজ পর্যন্ত পরিষ্কার নয়। এ দিকে, মেট্রো রেল আদিগঙ্গার উপরে পিলারের পরিবর্তে পুরো স্টেশন করে ফেলেছে!’’
যদিও মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ নিজেদের হলফনামায় স্পষ্ট জানিয়েছেন, স্থায়ী ভাবে নির্মিত মেট্রোর ওই পিলারগুলি নিয়ে এখন কিছু করা সম্ভব নয়। মেট্রোর দাবি, পিলার তৈরির জন্য জলের স্রোত বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার তারা রাজ্য সেচ দফতরকে ৭ কোটি ১৪ লক্ষ ৫১ হাজার ২১২ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। তা দিয়ে আদিগঙ্গার পলি নিষ্কাশন-সহ একাধিক কাজ করার কথা। জলে ভাসমান বর্জ্য আটকানোর জন্য কী ভাবে পিলারের আশপাশে জাল লাগানো যায়, তা নিয়ে পুরসভার সঙ্গেও চিঠি চালাচালি হয়েছে বলে মেট্রো জানিয়েছে।