সেন্ট জনস গির্জায় সুরজিতের সঙ্গে উৎসাহী পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র।
শহরকে ভালবাসতে হলে তাকে জানতে হবে। তার ভূগোল, ইতিহাসের সঙ্গে সংস্কৃতি, ঐতিহ্যকেও। এই সহজ সত্যটা বইয়ে লেখা থাকে না। এর জন্য নামতে হয় রাস্তায়। কলকাতার আনাচেকানাচে ছড়িয়ে থাকা ইতিহাসের নানা চিহ্নকে পড়ুয়াদের মনে আরও গভীর ভাবে এঁকে দিতে মাঝে মাঝেই তাদের নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন সুরজিৎ ধর।
শহরের সেন্ট জনস গির্জাকে ঘিরে বুধবার বসেছিল ইতিহাসের আসর। বিধাননগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুরজিৎ ছাত্রছাত্রীদের ব্যাখ্যা করলেন এই গির্জার গড়ে ওঠার ইতিহাস। এর গথিক স্থাপত্যের খুঁটিনাটি। সুরজিতের কথায়, ‘‘ইতিহাস বইয়ের সংক্ষিপ্ত পরিসরে অতীতের মূল সুরটা ধরা যায়, শহরের ছোটখাট ইতিহাস তাতে আঁটে না। তাই চেষ্টা করি, এই শহরের পথে পথে যে ইতিহাস ছড়িয়ে রয়েছে, তা ছোটছোট মনে এঁকে দেওয়ার। এতে শহরের প্রতি একটা শ্রদ্ধা তো বটেই, সেই সঙ্গে টান, ভালবাসাও জন্মায়।’’
শীতের দুপুরে এই আসরে সুরজিতের নিজের স্কুলের পড়ুয়ারা ছাড়াও অংশ নিয়েছিল বারাসতের কালীকৃষ্ণ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, ফুলবাগানের সুরকন্যা বালিকা বিদ্যালয়, বিধাননগর বালিকা বিদ্যালয়, গুরুদাস কলেজ এবং সিটি কলেজের বিভিন্ন শ্রেণির পড়ুয়ারা।
লকডাউনে থমকে থাকা সময়ের চাকা ঘুরতে শুরু করেছে। করোনার আতঙ্ক পুরোপুরি দূরে সরিয়ে রাখা যাবে না বুঝেই শহরের রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছিল এই পড়ুয়ারা। এদের অনেকেরই মনে হয়েছে মাঝে মাঝে এমন বেড়িয়ে পড়ার মধ্যে এক ধরনের মুক্তি রয়েছে। পড়াশোনার পাশাপাশি শহরকে ভালবাসার পাঠও নেওয়া হয়ে যায়।
নিয়মিত ক্লাসের বাইরে শহরের ইতিহাসকে ছাত্রছাত্রীদের কাছে তুলে ধরেন বিধাননগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুরজিৎ ধর। ইতিহাস গবেষক সুরজিৎ রাজ্য সরকারের শিক্ষারত্ন সম্মানেও ভূষিত।