পতন: সম্প্রতি ঝড়-বৃষ্টিতে সল্টলেকে পড়েছে গাছ। নিজস্ব চিত্র।
রাস্তার ধারের গাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ শুরু করেছে কলকাতা পুরসভা। সেই পথে এ বার হাঁটছে বিধাননগর পুরসভাও। এলাকার গাছের শারীরিক অবস্থা জানতে বিধাননগরে তৈরি হচ্ছে বিশেষ দল। চলতি সপ্তাহেই সেই দলের গাছ পরিদর্শন করতে বেরোনোর কথা।
কয়েক মাস আগে দক্ষিণ কলকাতায় গাছ ভেঙে আহত হয়েছিলেন এক বাইকচালক। বিধাননগরে, বিশেষত সল্টলেকের মাটিতে বালির ভাগ বেশি থাকায় মাঝেমধ্যেই গাছ ভেঙে পড়ে। তবে গাছ ভেঙে দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য পুরসভার পরিবেশ বিভাগের নতুন ওই দলটি বিভিন্ন এলাকার গাছের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে দেখে তা নথিবদ্ধ করবে।
বিধাননগরের মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) রহিমা বিবি জানান, বোর্ডের বৈঠকে ওই দল তৈরির অনুমোদন মিলেছে। তিনি বলেন, ‘‘গাছের স্বাস্থ্য কেমন, কোন গাছ কাটা প্রয়োজন, কোনটির ডালপালা ছাঁটতে হবে— এই সব জানতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। প্রথম পরিদর্শনে যাদবপুরের বিশেষজ্ঞেরাও থাকবেন।’’
প্রসঙ্গত, কলকাতা পুরসভার উদ্যান বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার জানান, তাঁরা কলকাতার দু’টি বরোয় কী কী গাছ রয়েছে, গাছেদের বয়স কত, তাদের স্বাস্থ্যের অবস্থা কেমন— এই সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহে একটি পাইলট প্রকল্পের কাজ শেষ করেছেন।
অন্য দিকে, ঝড়ের দাপট বেশি হলেই বিধাননগরের সল্টলেকে গাছ পড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। কখনও আবার সামান্য বৃষ্টিতেই মাটি আলগা হয়ে উপড়ে যায় গাছ। কারণ, সেখানে মাটিতে বালির ভাগ বেশি। অতীতে বিডি ব্লকে ঝড়ে ইউক্যালিপটাস গাছ ভেঙে একটি বাড়ির দেওয়াল ধসিয়ে দিয়েছিল। গত মঙ্গলবার এফডি ব্লকে গাছ পড়ে যায়। সল্টলেকের কেষ্টপুর খালের ধারে কিছু গাছ বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে বলে দাবি।
পুরসভার পরিবেশ বিভাগ জানাচ্ছে, গাছেদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় সাত জনের ওই দলটি এলাকায় ঘুরবে। রহিমা জানান, স্থানীয় কাউন্সিলরকে বলা হবে, এলাকায় কোনও গাছ বিপজ্জনক ভাবে রয়েছে জানতে পারলে ওই দলকে জানাতে। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে, গাছটির ছবি তুলে যাদবপুরের বিশেষজ্ঞদের থেকে পরামর্শ নেবে। প্রয়োজনে সেই গাছ কেটে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, সল্টলেকে অনেক সময়ে গাছের ডাল ছাঁটার জন্য স্থানীয়েরা পুরসভার থেকে অনুমতি চান। কিন্তু পুরসভাকে গাছ কাটতে হলে পরিবেশ দফতরের অনুমতির অপেক্ষায় থাকতে হয়। পুরসভা জানাচ্ছে, এ বার থেকে পুরকর্মীরাই যাতে গাছ কাটার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে গাছটি আদৌ কাটার প্রয়োজন রয়েছে কি না, সে সম্বন্ধে আগে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হবে বলেই পুরসভার দাবি।