School Safety

পড়ুয়া প্রায় নেই, স্কুল খোলা নিয়ে প্রশ্ন

করোনার লেখচিত্র ক্রমশই ঊর্ধ্বমুখী। স্কুলে কমছে পড়ুয়া। কিছু স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে। এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়ার সংখ্যা তলানিতে ঠেকায় স্কুল খুলে রাখার যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষকদের একটি অংশ।

Advertisement

আর্যভট্ট খান ও  রূপকিনী সেনগুপ্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৫৪
Share:

প্রতীকী চিত্র

করোনার লেখচিত্র ক্রমশই ঊর্ধ্বমুখী। স্কুলে কমছে পড়ুয়া। কিছু স্কুলে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে। এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়ার সংখ্যা তলানিতে ঠেকায় স্কুল খুলে রাখার যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষকদের একটি অংশ। তাঁদের মতে, বেশ কয়েকটি স্কুলে শিক্ষকদের করোনা ধরা পড়ায় স্কুল বন্ধ রাখতে হচ্ছে। ফলে স্কুলে সন্তানকে পাঠাতে সাহস করছেন না অনেক অভিভাবক।

Advertisement

এক শিক্ষিকার করোনা ধরা পড়ায় তিন সপ্তাহ বন্ধ ছিল শেঠ সুরজমল জালান বালিকা বিদ্যালয়। গত মঙ্গলবার নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস চালু হয়েছিল ওই স্কুলে। তার দু’দিনের মধ্যেই ফের এক শিক্ষিকা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর সামনে এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের স্কুলে পাঠানো নিয়েও চিন্তিত ছিলেন অভিভাবকেরা। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে ফের তিন সপ্তাহের জন্য স্কুলে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পঠনপাঠন বন্ধ। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল। নবম ও দশম শ্রেণির ফার্স্ট টার্ম পরীক্ষাও ছিল চলতি মাসে। আপাতত সবই স্থগিত রাখতে হচ্ছে। প্রয়োজনে ওই পরীক্ষা অনলাইনে নেওয়া হতে পারে বলেও জানিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

হাওড়ার দুইল্যা পাঁচপাড়া স্কুলের শিক্ষিকা সুমনা সেনগুপ্ত জানান, তাঁদের স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণির ৯৮ জন পড়ুয়ার মধ্যে এখন চার থেকে পাঁচ জন আসছে। একাদশ শ্রেণির ৬৪ জনের মধ্যে আসছে ৯-১০ জন। নবম ও দশমের অবস্থাও একই রকম। তিনি বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণ ফের বাড়তে দেখে অভিভাবকেরা খুবই চিন্তিত।’’ কয়েকটি স্কুল জানিয়েছে, পড়ুয়া কম আসায় রুটিনও ঠিক মতো করা যাচ্ছে না। আর রুটিন না থাকাতেও অনেকে স্কুলে আসছে না। কোন্নগরের কল্যাণ পরিষদ বালিকা শিক্ষা সদনের সহকারী শিক্ষিকা চন্দনা ঘোষ জানান, তাঁদের স্কুলেও পড়ুয়া এখন অনেক কম। নবম ও দশম শ্রেণিতে চার থেকে পাঁচ জন পড়ুয়া আসছে। চন্দনা বলেন, ‘‘অফলাইন ক্লাস শুরু হয়ে গিয়েছে। অথচ সেই সুবিধা সবাই পাচ্ছে না।’’

Advertisement

কোভিড-বিধি মেনে ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে স্কুল চালু হয়েছিল। প্রশ্ন, এখনও একই ভাবে চলছে কি? স্কুল কর্তৃপক্ষের একটি অংশের দাবি, বিধি মানার ক্ষেত্রে কিছু স্কুলেও শিথিলতা এসেছে। এক প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘সরকারি সব স্কুল নিজেদের পয়সায় রোজ জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব নয়। সব সময়ে থার্মাল গান দিয়ে তাপমাত্রা পরীক্ষাও হচ্ছে না। এই অবস্থায় অনেক অভিভাবক সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন। এত কম পড়ুয়া নিয়ে স্কুল খুলে রাখা কতটা জরুরি?’’

শিক্ষক সংগঠনগুলির একাংশের মতে, দ্বাদশ শ্রেণির প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে অধিকাংশ স্কুলে। ফলে ওই পড়ুয়ারা স্কুলে আসছে না। যারা মাধ্যমিক দেবে, তারাও আসছে না। নবম ও একাদশের পড়ুয়ারা আসছে খুব কম। তাঁদের প্রশ্ন, এই পরিস্থিতিতে স্কুল খুলে রাখা কি খুব যুক্তিযু্ক্ত?

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় শুক্রবার বলেন, ‘‘স্কুলে যত কম পড়ুয়াই আসুক না কেন, করোনা-বিধি মানতেই হবে। বরং পড়ুয়া
কম আসায় দূরত্ব-বিধি মেনে ক্লাস করা সুবিধাজনক। বিশেষ পরিস্থিতিতে কোনও স্কুল পঠনপাঠন বন্ধ
রাখবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement