প্রতীকী ছবি।
কয়েক দিন ধরেই নেশামুক্তি কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরতে চাইছিলেন এক আবাসিক। রবিবার সকালে তাঁর সেই জেদ চরমে ওঠে। নেশামুক্তি কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ ওই ব্যক্তিকে বাড়ি পাঠাতে রাজি না হওয়ায় রান্নাঘরে ছুরি নিয়ে ঢুকে কর্মীদের উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল তাঁর বিরুদ্ধে। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে হরিদেবপুর থানার কাছে একটি নেশামুক্তি কেন্দ্রে। পুলিশ জানিয়েছে, ছুরির আঘাতে সেখানকার দুই কর্মী আহত হয়েছেন। অভিযুক্ত আবাসিককে প্রথমে আটক ও পরে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, মাসখানেক আগে ওই নেশামুক্তি কেন্দ্রে ভর্তি হন অভিযুক্ত। বালিগঞ্জের বাসিন্দা ওই ব্যক্তিকে পরিবারের সদস্যেরাই ভর্তি করিয়ে যান বলে দাবি কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের। তখন থেকে এখানেই ছিলেন বছর চল্লিশের ওই যুবক। অভিযোগ, গত কয়েক দিন যাবৎ বাড়ি যাওয়ার জন্য জোরাজুরি করতে থাকেন তিনি। কিন্তু তাঁর চিকিৎসা চলায় কর্তৃপক্ষ রাজি হননি।
কর্তৃপক্ষের দাবি, এ দিন সকালেও ওই আবাসিক কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে বাড়ি চলে যাওয়ার জন্য ফের জোর করতে থাকেন। অভিযোগ, তাতে কাজ না হওয়ায় ছুরি নিয়ে রান্নাঘরে ঢুকে পড়েন তিনি। ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে সেখানে থাকা কর্মীদের উপর ছুরি নিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করেন। ওই কেন্দ্রের দুই কর্মী অরূপ নস্কর ও রাজীব ডি কোস্টা আহত হন। চিৎকার শুনে অন্যান্য কর্মীরা পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকে আহতদের উদ্ধার করে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা জানান, অরূপের আঘাত গুরুতর। তাঁর শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাত লেগেছে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।
খবর পেয়ে হরিদেবপুর থানার পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রথমে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘মাঝেমধ্যেই ওই নেশামুক্তি কেন্দ্র থেকে চিৎকার শুনি। এ দিনও তেমন চিৎকার শুনে প্রথমে আমল দিইনি। পরে দেখি, রক্তাক্ত অবস্থায় দু’জনকে বার করা হচ্ছে।’’ নেশামুক্তি কেন্দ্রের প্রেসিডেন্ট মিহির দত্ত বলেন, ‘‘গত ২৩ এপ্রিল এখানে ভর্তি হয়েছিলেন অভিযুক্ত। তাঁর চিকিৎসাও চলছিল। সকালে আচমকা তিনি হামলা চালান। পুলিশকে সব জানিয়েছি।’’
কিন্তু সত্যিই কি বাড়ি যেতে না দেওয়ায় এই হামলা, না কি এর পিছনে অন্য কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ওই কেন্দ্রের বৈধ লাইসেন্স আছে কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।