ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দা ওই ব্যক্তিকে প্রায় চার মাস বাদে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সাহায্য করলেন চিকিৎসাকর্মীরাও। প্রতীকী ছবি।
রাস্তার ধারে সঙ্কটজনক অবস্থায় পড়ে রয়েছেন এক ব্যক্তি। তাঁর ডান পায়ের হাঁটু থেকে পচন ধরেছে। প্রায় অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করায় পুলিশ। তার পরে ওই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের খুঁজে বার করে তাঁদের কাছে তাঁকে ফেরানোর ব্যবস্থা করল পুলিশ ও একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দা ওই ব্যক্তিকে প্রায় চার মাস বাদে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সাহায্য করলেন চিকিৎসাকর্মীরাও।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই ব্যক্তির নাম অশোককুমার ঝা (৬৬)। তাঁর বাড়ি বিহারের মধুবনী জেলার কাচুই গ্রামে। তিনি স্কিৎজ়োফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত। গত নভেম্বরে ঝাড়খণ্ডের রাঁচীতে চিকিৎসা করাতে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন অশোক। তার পর থেকেই নিখোঁজ। পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও হাসপাতালের কর্মীদের সাহায্যে খুঁজে পাওয়া দাদাকে দেখতে মঙ্গলবার কলকাতায় আসেন তাঁর ভাই সন্তোষ ঝা। বৃহস্পতিবার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে সন্তোষ বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশ এবং ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অনেক সাহায্য করেছে। দাদার শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। আমরা ভাবিইনি যে, ওকে জীবিত অবস্থায় খুঁজে পাব। আশা করছি, দাদাকে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, বাড়ি নিয়ে যেতে পারব।’’
পুলিশ জানিয়েছে, আর জি কর সেতুর কাছে রাস্তার ধারে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে ছিলেন অশোক। তাঁর পায়ে পচন ধরেছিল। গত ২১ ফেব্রুয়ারি তাঁকে লক্ষ করেন শ্যামবাজার ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তিনি যোগাযোগ করেন উল্টোডাঙা থানার সঙ্গে। ট্র্যাফিক গার্ড এবং থানার তরফে যোগাযোগ করা হয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে। পুলিশের উদ্যোগে অশোককে আর জি কর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, ওই সময়ে নিজের নামটুকুও বলতে পারছিলেন না অশোক। চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচারে তাঁর ডান হাঁটুর উপর থেকে পা কেটে বাদ দেন।
অস্ত্রোপচারের পরে অশোককে জিজ্ঞাসা করে জানা যায়, তাঁর বাড়ি বিহারের মধুবনীর কাচুই গ্রামে। পুলিশ সেখানে খোঁজ করতে গিয়ে জানে, আর জি করে এক ঠিকাকর্মী রয়েছেন, যাঁর আত্মীয়ের বাড়ি ওই এলাকায়। তাঁরই মাধ্যমে অশোকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মঙ্গলবার মুম্বই থেকে আসেন অশোকের ভাই সন্তোষ। পুলিশকর্মীরা ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাহায্যে দুই ভাইয়ের দেখা করিয়ে দেন।