আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলে এক নার্সিং পড়ুয়া তরুণীর আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল। মাস তিনেক আগে এই আরজি করেই এক মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় উত্তাল হয়েছে বাংলা। সেই ঘটনার রেশ এখনও চলছে। তার মধ্যে আবার সেই আরজি করেই নার্সিং পড়ুয়ার আত্মহত্যার চেষ্টার খবর প্রকাশ্যে এল।
জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে হস্টেলে নিজের ঘরেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই পড়ুয়া। তাঁর হাতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে সেই আঘাত কী ভাবে হল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সূত্রের খবর, হস্টেলে নিজেদের মধ্যে কোনও কারণে বচসা হয়। সেই বচসা থেকেই আত্মহত্যার চেষ্টা করে থাকতে পারেন ওই পড়ুয়া। টালা থানায় ঘটনাটি সম্পর্কে জানানো হয়েছে। সূত্রের খবর, ঘটনা সম্পর্কে খোঁজখবর শুরু করেছে পুলিশ। বর্তমানে আহত অবস্থায় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে ভর্তি আছেন ওই পড়ুয়া। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। ঘটনা প্রসঙ্গে আরজি করের নার্সেস ইউনিটির তরফে ভাস্বতী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হস্টেল হোক বা হাসপাতালে নার্স পড়ুয়াদের জন্য সুরক্ষিত পরিবেশ তৈরি করার প্রয়োজন। যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁরা আরও সহমর্মিতার সঙ্গে বিষয়গুলি দেখবেন, বলে আশা রাখছি।’’
গত ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চারতলার সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয় এক মহিলা চিকিৎসক-পড়ুয়ার দেহ। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ ওঠে। ওই দিন থেকেই প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেন রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলির জুনিয়র ডাক্তারেরা। প্রতিবাদে পথে নামেন তাঁরা। তাঁদের আন্দোলনে যোগ দেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। দাবি, ‘নির্যাতিতার জন্য বিচার চাই’। সেই দাবিকে সামনে রেখে আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়িয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। এগিয়ে এসেছে সিনিয়র ডাক্তারেরাও। মেডিক্যাল কলেজগুলির নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আন্দোলনকারীরা। নির্যাতিতার জন্য বিচার, মেডিক্যাল কলেজগুলির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা-সহ একাধিক দাবি নিয়ে প্রথমে কর্মবিরতি এবং পরে ‘আমরণ অনশন’ শুরু করেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সরকারের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকের পর অনশন তোলেন তাঁরা। তবে আন্দোলনের পথ থেকে সরে আসেননি।
শনিবারও আরজি কর-কাণ্ডের তিন মাস পার হওয়ার দিনে একাধিক কর্মসূচি নিয়েছিলেন তাঁরা। আরজি করের মহিলা চিকিৎসক খুনের ঘটনার মধ্যেই প্রকাশ্যে আসে ওই মেডিক্যাল কলেজের আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগের কথা। সিবিআই একযোগে দুই ঘটনার তদন্ত করছে। দুর্নীতির অভিযোগে আরজি করের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করে সিবিআই। পরে খুন এবং ধর্ষণ-কাণ্ডে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগেও সন্দীপকে নিজেদের হেফাজতে নেয় তারা। সেই আবহেই আবার আরজি করে নার্সিং পড়ুয়ার আত্মহত্যার খবরে শোরগোল পড়ল।