— প্রতীকী চিত্র।
মৃতদেহ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জোড়াবাগান থানা এলাকার সেন লেনে এক প্রৌঢ়কে খুন ও লুটপাটের ঘটনার কিনারা করল কলকাতা পুলিশ। এই ঘটনায় শুক্রবার এক নাবালককে আটক করা হয়েছে নদিয়া থেকে। তার মায়ের সঙ্গে ওই প্রৌঢ়ের সম্পর্ক ছিল বলে তদন্তে জেনেছে পুলিশ। এ দিন রাতে সাংবাদিক বৈঠক করে কলকাতা পুলিশের ডিসি (উত্তর) দীপক সরকার এ কথা জানান। লুট হওয়া গয়না ও প্রৌঢ়ের মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সেন লেনে গত বৃহস্পতিবার একটি চারতলা বাড়ির চিলেকোঠার ঘর থেকে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (৫৮) নামে ওই প্রৌঢ়ের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর পরিবার খুনের অভিযোগ দায়ের করে। অভিজিতের দেহের ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট দেখে পুলিশও নিশ্চিত হয়, তাঁকে খুনই করা হয়েছে। সূত্রের খবর, সেই রিপোর্ট অনুসারে, ওই প্রৌঢ়ের মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। তাঁর মাথায় আঘাতের একাধিক চিহ্নও মিলেছে। ঘটনার খবর পেয়ে সে দিনই সেখানে গিয়েছিলেন ডিসি (উত্তর)। কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার তদন্তকারী অফিসারেরাও ঘটনাস্থলে যান। নিয়ে যাওয়া হয় পুলিশ কুকুরও।
সেন লেনের ওই বাড়িতে চিলেকোঠার দু’টি ঘর নিয়ে একাই থাকতেন অভিজিৎ। ঘটনার দিন চিলেকোঠার ঘরের সামনের দিকের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকে প্রৌঢ়ের দেহ পাওয়া যায়। তদন্তে নেমে এখানেই খটকা লেগেছিল তদন্তকারীদের। এই ঘটনায় পরিচিত কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ হয়েছিল তাঁদের। তদন্তে নেমে ওই বাড়ির অন্য বাসিন্দা, প্রৌঢ়ের বোন, ভাগ্নে ও পরিচিত লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করেন তদন্তকারীরা। অভিজিতের মোবাইল ফোনটি পাওয়া যাচ্ছিল না। সেই সূত্র ধরে তদন্তে এগোতে থাকে পুলিশ। জানা যায়, ওই প্রৌঢ়ের মোবাইল থেকে অ্যাপ-ক্যাব বুক করেও তা বাতিল করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে ফোনটি ব্যবহারও করেছিল কেউ। সেই সূত্র ধরেই ওই নাবালকের বিষয়টি তদন্তে উঠে আসে। তদন্তকারীদের একটি দল নদিয়ার চাপড়া এলাকা থেকে তাকে আটক করে।
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ওই নাবালকের মায়ের সঙ্গে প্রৌঢ়ের ঘনিষ্ঠতা ছিল। প্রৌঢ় তাদের বাড়িতে গিয়েছিলেন। নাবালকটিও তার মায়ের সঙ্গে প্রৌঢ়ের বাড়িতে যাতায়াত করত। পুলিশ জেনেছে, মা এবং ওই প্রৌঢ়ের কিছু ছবি ছিল নাবালকের কাছে। সেই সূত্রেই সম্ভবত অভিজিতের কাছ থেকে টাকাপয়সা দাবি করা হয়েছিল। অভিজিৎ সেই দাবি না মেটানোয় তাঁকে খুন করে ঘর থেকে লুটপাট করা হয় বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান পুলিশের।
পুলিশের ধারণা, গত বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে। পাশের বাড়ির ছাদ থেকে ওই প্রৌঢ়ের বাড়ির ছাদে চলে এসেছিল সেই নাবালক। মই বেয়ে পৌঁছে গিয়েছিল চিলেকোঠার ঘরে। তার পরে প্রৌঢ়ের মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে তাঁকে খুন করে সে। পুলিশের দাবি, ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই এই খুন।