ফাইল চিত্র।
নিচু এলাকা, অপরিকল্পিত ভাবে বসতি গড়ে ওঠা, উপযুক্ত নিকাশি ব্যবস্থার অভাব, বাগজোলা খাল থেকে জল উপচে এলাকা ভাসিয়ে দেওয়া। রাজারহাট গ্রামীণ এলাকা জলমগ্ন হওয়ার নেপথ্যে উঠে আসছে এই কারণগুলিই। গত সপ্তাহে ভারী বৃষ্টির পরে ৩-৪ দিন ধরে রাস্তায় জল জমে থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এ বার তাই এই জল-সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান করতে চাইছে রাজারহাট পঞ্চায়েত সমিতি, ব্লক প্রশাসন। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি দফতরকে সঙ্গে নিয়ে এই বিষয়ে একটি বৈঠক করা হবে বলে রাজারহাট ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি অতিবর্ষণে রাজারহাট পঞ্চায়েতের অন্যান্য অংশের সঙ্গে জ্যাংড়া হাতিয়াড়া ২ নম্বর এবং চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়। বৃষ্টির জলের পাশাপাশি টইটম্বুর বাগজোলা খালের জল উপচে যাওয়ায় সমস্যা বাড়ে জ্যাংড়া হাতিয়াড়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে। অন্য জায়গার তুলনায় এই দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়। এর মধ্যে চাঁদপুর এলাকায় পরিদর্শনে গিয়েছিলেন বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়, রাজারহাটের বিডিও ঋষিকা দাস, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর কর প্রমুখ। দুই শতাধিক বাসিন্দাকে আলাদা করে উঁচু জায়গায় নিয়ে গিয়ে রাখতে হয়। সেখানে তাঁদের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়।
জ্যাংড়া হাতিয়াড়া পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, খালের জল উপচে ভাসিয়ে দিয়েছে নিচু এলাকা। এমনকি জল ঢুকে পড়েছে বাড়িতেও। অবস্থা এমনই যে, জমা জলে ডুবে গিয়েছে পরিস্রুত জল সরবরাহের কলও। শ্যামাপদ মণ্ডল নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানাচ্ছেন, অন্যান্য জায়গায় উন্নয়ন হলেও বালিগুড়ি, শুলংগুড়ি-সহ বিভিন্ন এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা এখনও দুর্বল রয়ে গিয়েছে। যার ফল ভুগতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
আবার চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, জমা জল নেমে যাওয়ার কোনও পথ নেই বলেই সেখানে যত সমস্যা। গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, এলাকার একের পর এক জমিতে নির্মাণকাজ করা হয়েছে। যার ফলে জল নেমে যাওয়ার স্বাভাবিক পথও ক্রমশ নষ্ট হয়েছে। এর পাশাপাশি এলাকায় যেটুকু নিকাশি ব্যবস্থা রয়েছে, তা-ও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ হয় না। তার জেরেই এমন অবস্থা। শুধু অতিবর্ষণ নয়, মাঝারি বৃষ্টিতেও এলাকায় জল জমে বলে অভিযোগ। রাজারহাট গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, লাউহাটি মোড়ের পর থেকে রাস্তা তৈরি হলেও নিকাশি ব্যবস্থা তৈরি হয়নি। ফলে বৃষ্টি হলে জল জমার প্রবণতা রয়েছে।
রাজারহাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর কর জানান, জ্যাংড়া হাতিয়াড়া গ্রামীণ এলাকায় অপরিকল্পিত ভাবে বসতি গড়ে উঠেছে। নিকাশি ব্যবস্থা করার পর্যাপ্ত জায়গা নেই। তবে বেশি সমস্যা হয়েছে বাগজোলা খাল থেকে জল উপচে যাওয়ায়। চাঁদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও নিকাশিজনিত সমস্যা রয়েছে বলে মেনে নেন তিনি। সমস্যার সমাধানে পরিকল্পনা করতে বৈঠক করা
হবে বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফ থেকে।