বিশ্ববিদ্যালয়-চত্বরের কর্মকাণ্ড নিয়ে জনমানসে বিরূপ ধারণার জেরেই প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাদবপুরের নম্বর কমছে বলে শুক্রবার এক আলোচনাসভার পর্যবেক্ষণে উঠে এল। ক্যাম্পাসে মদ্যপান এবং মাদক সেবন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় ওই সভায়। অবিলম্বে ক্যাম্পাসে মদ ও মাদক সেবন বন্ধ করার দাবি ওঠে।
ক্যাম্পাসে মদ্যপান এবং মাদক সেবনের বিরুদ্ধে কনভেনশনের আয়োজন করেছিলেন ছাত্র, শিক্ষক, গবেষক, কর্মী, আধিকারিকদের একাংশ। এই সব ঘটনা ঘটতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিংয়ের ক্ষেত্রে তার খারাপ প্রভাব পড়বে বলে সেখানেই মন্তব্য করেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। উপাচার্য ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অনেকে সভায় উপস্থিত সেখানে ছিলেন। ছিলেন ইংরেজির প্রবীণ অধ্যাপক সুকান্ত চৌধুরীও।
বক্তৃতা দিতে উঠে মদ ও মাদক সেবনের সমস্যা নিয়ে চিন্তাভাবনা করার জন্য পড়ুয়াদের অনুরোধ করেন উপাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘এ-সবের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিং যাতে নেমে না-যায়, সে-দিকে নজর দিতে হবে।’’ কেন্দ্রীয় সরকারের বিচারে দেশের প্রাদেশিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে যাদবপুর এখন প্রথম স্থানে রয়েছে ঠিকই। কিন্তু বিভিন্ন মূল্যায়নে তাদের নম্বর কমছে। পঠনপাঠনের ঘাটতি নয়, এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে কাঠগড়ায় তুলছে শিক্ষা শিবিরের একটি বড় অংশ। এই প্রেক্ষিতে অন্যতম সহ-উপাচার্য প্রদীপকুমার ঘোষ এ দিনের আলোচনাসভায় জানান, মান নির্ধারণের ক্ষেত্রে যাদবপুর কম নম্বর পাচ্ছে ‘পারসেপশন’ অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জনমানসে প্রতিকূল ধারণার জন্যই। তাই এই বিষয়ে অবিলম্বে নজর দিতেই হবে। বিশ্ববিদ্যালয়-চত্বরে মদ-মাদকে মেতে ওঠার মোকাবিলায় কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা দরকার বলে মন্তব্য করেন অন্য সহ-উপাচার্য আশিস বর্মা।
সম্প্রতি ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া বেশ কিছু ঘটনার দিকে আঙুল তুলে সুকান্তবাবুর মন্তব্য, এগুলো নিন্দনীয়। নির্বাচিত ছাত্র সংসদের বদলে অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল গড়ার সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে পড়ুয়াদের একাংশ সম্প্রতি যে-ভাবে উপাচার্যকে ঘেরাও করেছিলেন এবং যে-ভাবে দেওয়ালে দেওয়ালে স্লোগান লেখা হচ্ছে, সেই সব প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, কোন বিষয়ে আন্দোলনের তীব্রতা কত হবে, পড়ুয়াদের তা ভেবে দেখা দরকার। এই ধরনের বিষয় ও ঘটনা থেকে সামগ্রিক ভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ সম্পর্কে বাইরে খারাপ বার্তা যায়। গবেষণা-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে এবং বিনিময় কর্মসূচিতে এর ছায়া পড়তে পারে।
মদ ও মাদক সেবন এবং অন্যান্য অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে ‘ফোরাম অব জেইউ কমিউনিটি’ গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয় কনভেনশনে। দাবি ওঠে, ক্যাম্পাসে নেশাভাঙ, বিভিন্ন অনৈতিক কাজ ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে।