আটকে রয়েছে বাণিজ্যিক কাজে বাইক ব্যবহারের জন্য লাইসেন্স তৈরির কাজ। প্রতীকী ছবি।
ধারের বাইকে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ (এনওসি) দিচ্ছে না ব্যাঙ্ক। ফলে আটকে রয়েছে বাণিজ্যিক কাজে বাইক ব্যবহারের জন্য লাইসেন্স তৈরির কাজ। গত ফেব্রুয়ারিতে ঘোষণার পরেও কাজ এগোয়নি। সূত্রের খবর, জট কাটাতে ব্যাঙ্ক-সহ ঋণ দানকারী সমস্ত সংস্থার দফতরে সরকারি নোটিস পাঠানো হয়েছে। আজ, সোমবার কসবায় আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের (আরটিও) অফিসে সব সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা পরিবহণমন্ত্রীর।
অভিযোগ, বছরের পর বছর প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা হলেও বাস্তবে কিছুই বদলায় না। বরং মোটরবাইক নিয়ে ‘রেটিং’ বাড়ানোর ঝুঁকির যাত্রা চলে। কখনও পুলিশ পদক্ষেপ করলেও বেশির ভাগই থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। ব্যক্তিগত নম্বর প্লেট লাগানো মোটরবাইক নিয়ে ব্যবসায়িক কাজ চালিয়ে যাওয়ায় সরকারি কোষাগারে ঢোকে না পর্যাপ্ত পরিমাণ কর। তাই সরকারি স্তরে সিদ্ধান্ত হয়, কমার্শিয়াল ভেহিক্লের লাইসেন্স দেওয়া হবে মোটরবাইককে। ফেব্রুয়ারিতে এই ঘোষণা হলেও চলতি মাসের শুরুতে বেলতলায় আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের (আরটিও) অফিসে চালু হয় লাইসেন্সের জন্য নাম নথিভুক্ত করা।
কিন্তু, শুরুর দু’দিনের মধ্যেই বিপত্তি বাধে ঋণ নিয়ে কেনা বাইকের ক্ষেত্রে। কমার্শিয়াল ভেহিক্ল হিসাবে নথিভুক্তির জন্য আরটিও অফিস থেকে ঋণ দানকারী সংস্থার এনওসি চাওয়া হয়। ব্যাঙ্ক-সহ সমস্ত ঋণ দানকারী সংস্থা জানিয়ে দেয়, ঋণ না মেটা পর্যন্ত এনওসি দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ হিসেবে জানানো হয়, ঋণে কেনা গাড়ি বা মোটরবাইকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ধরেই হিসাব রাখে সংশ্লিষ্ট সংস্থা। ঋণ খেলাপির ক্ষেত্রে ওই নম্বর ধরেই পদক্ষেপ করা হয়। এমনকি ঋণ মেটানোর মাঝপথে গাড়ি বিক্রির ক্ষেত্রেও পুরো ঋণ মিটিয়ে এনওসি নিয়ে হাতবদল করতে হয়। রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে মোটরবাইক সংগঠনের তরফে জানানো হয়, ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহৃত বেশির ভাগ বাইকই ঋণে কেনা। এই জটিলতা না কাটলে গোটা প্রক্রিয়াই ধাক্কা খাবে।
তা হলে উপায়? মন্ত্রী বলেন, ‘‘আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করতে হবে। ঋণ দানকারী সংস্থার সমস্যা বুঝে কয়েকটি প্রস্তাব দেওয়া হবে।’’ ‘কলকাতা সাবার্বান বাইক-ট্যাক্সি অপারেটর্স ইউনিয়ন’-এর সভাপতি শান্তি ঘোষ জানাচ্ছেন, সরকার তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওই সংস্থা ঋণ দানকারীর টাকা মিটিয়ে এনওসি নেবে। এর পরে নিজের অধীনে তৃতীয় পক্ষ নতুন ঋণ চালু করবে। অথবা ঋণ দানকারী সংস্থাকে কিছুটা টাকার বিনিময়ে এনওসি দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হতে পারে। তাঁর যুক্তি, ‘‘গাড়ি বা বাইকের ক্ষেত্রে ঋণ দানকারী সংস্থা তার গ্রহীতাকে চেনে নম্বর প্লেটের ভিত্তিতে। প্লেট বদলালে নম্বর বদলাবে ঠিকই, কিন্তু চেসিস নম্বর ও গ্রাহকের নাম একই থাকবে। অল্প টাকা নিয়ে লোক রেখে চেসিস নম্বর ধরে নতুন রেজিস্ট্রেশন নম্বর কম্পিউটারে তুলে নিলেই হয়!’’
এই পথেই কি জট ছাড়বে? উত্তর মিলবে দ্রুত।