Coronavirus in Kolkata

কোভিড পরীক্ষা করানোর নামে বহু প্রতারণা, ধৃত অভিযুক্ত

পঞ্চসায়রের এক আবাসনের বাসিন্দা সৌমিত্র নিজেকে মুকুন্দপুরের একটি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের প্রতিনিধি বলে পরিচয় দিয়ে একাধিক ব্যক্তির কাছে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠাত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২০ ০২:৩৬
Share:

জালে: কোভিড পরীক্ষার নামে প্রতারণার অভিযোগে ধৃত সৌমিত্র চৌধুরী (মাঝে) । মঙ্গলবার, আলিপুর আদালতে। নিজস্ব চিত্র

এ বার হাজারখানেক লোকের কোভিড পরীক্ষার নাম করে প্রতারণার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। কোভিড পরীক্ষা করানোর নামে টাকা হাতানোর অভিযোগে সৌমিত্র চৌধুরী নামে ওই ব্যক্তিকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

এ দিন ধৃতকে আদালতে তোলা হলে আগামী ৫ অগস্ট পর্যন্ত তার পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। সরকারি কৌঁসুলি শুভেন্দু ঘোষ বলেন, ‘‘এ ভাবে করোনা পরীক্ষার নামে প্রতারণা করতে গিয়ে অনেকের ক্ষতি করেছে ওই ব্যক্তি। তাই তার জামিনের বিরোধিতা করা হয়েছে।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, পঞ্চসায়রের এক আবাসনের বাসিন্দা সৌমিত্র নিজেকে মুকুন্দপুরের একটি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের প্রতিনিধি বলে পরিচয় দিয়ে একাধিক ব্যক্তির কাছে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠাত। সেই মেসেজে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের ওয়েবসাইটের লিঙ্ক থাকত। সেই সঙ্গে থাকত সৌমিত্রের নিজের মোবাইল নম্বরও। সেই মেসেজ দেখে অনেকেই করোনা পরীক্ষা করাতে চেয়ে সৌমিত্রকে ফোন করতেন।

Advertisement

সম্প্রতি মুকুন্দপুরের ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে জানতে পারলে মঙ্গলবার তাঁদের পক্ষ থেকে পূর্ব যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। এর পরে এ দিন দুপুরেই সৌমিত্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

প্রাথমিক ভাবে তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ধৃত সৌমিত্র এবং তার স্ত্রী ওই হাসপাতালে আগে কাজ করত। প্রায় চার বছর আগে সেই চাকরি ছেড়ে দেয় সে। কিন্তু করোনা-পর্ব শুরু হওয়ার পরে সৌমিত্র ওই হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ অনেককেই পাঠাতে শুরু করে। আর তা দেখে কেউ তাকে ফোন করলে নমুনাপিছু ৩৬০০ টাকা জমা করানোর কথা বলে আর একটি লিঙ্ক পাঠাত সৌমিত্র। সেখানে ওই টাকা জমা করা হলে তবে ওই হাসপাতালের তরফে করোনা পরীক্ষার জন্য লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হবে বলেও জানাত সৌমিত্র।

শুধু তা-ই নয়। এর পরে পিপিই পরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনাও সংগ্রহ করে নিয়ে আসত সৌমিত্র। সেই নমুনা নিজের চেনা প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করিয়ে এনে রিপোর্ট দিত। তবে বেশির ভাগ সময়েই আগেভাগে টাকা পেয়ে গেলে আর নমুনা সংগ্রহ করতেই যেত না সৌমিত্র। টাকা নিয়েও কেন কেউ নমুনা সংগ্রহ করতে এলেন না, সম্প্রতি অনেকের কাছ থেকে এমন ফোন পেয়ে সন্দেহ হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। তার পরেই পুলিশে বিষয়টি জানান তাঁরা। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, ধৃত ব্যক্তি এখনও পর্যন্ত প্রায় হাজারের মতো লোককে এ ভাবে প্রতারণা করেছে।

এর আগে করোনা পরীক্ষার ভুয়ো রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে দুই ভাই-সহ মোট তিন জনকে গ্রেফতার করেছিল নেতাজিনগর থানার পুলিশ। সেই ঘটনায় ধৃত দুই ভাই, যারা এসএসকেএম এবং আর জি কর হাসপাতালের দু’জন চুক্তিভিত্তিক ল্যাবকর্মী, একজন দালালের সাহায্য নিয়ে এক রোগীর কোভিড পরীক্ষা না করিয়েই রিপোর্ট দিয়েছিল বলে অভিযোগ। পরে সেই রোগীর মৃত্যু হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement