—ফাইল চিত্র।
দীপক জোশীর ছাড়া পাওয়া এবং নিজের দেশে ফেরার ঘটনা একটি দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করল কলকাতা হাইকোর্ট। বিনা বিচারে চল্লিশ বছর ধরে আটকে থাকা দীপকের ঘটনা খবরের কাগজে প্রকাশিত হওয়ার পরেই কলকাতা হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছিল।
সোমবার সেই মামলার শুনানির শুরুতেই প্রধান বিচারপতি টি বি রাধাকৃষ্ণন এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, দীপক জোশী যে তাঁর মায়ের কাছে ফিরতে পেরেছেন, তা অত্যন্ত আনন্দের খবর। কিন্তু দীপকের মতো আরও কত বিচারাধীন বন্দি মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে জেলে আটকে আছেন, তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিচারপতিরা। রাজ্য কারা বিভাগের আইজি এবং ডিআইজি-কে ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন নির্দেশ দিয়ে বলে, রাজ্যের বিভিন্ন জেলে থাকা যে সব বিচারাধীন বন্দির শুনানিতে হাজিরা দেওয়ার মতো মানসিক সুস্থতা নেই, তাঁদের সম্পূর্ণ তথ্য দিয়ে তালিকা পেশ করতে হবে। ওই বন্দিদের মধ্যে যাঁদের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা হয়েছে, তাঁদের জামিনের বিষয়টিও যাতে দেখা হয়, তার জন্য অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তকে বলা হয়েছে।
অন্য দিকে, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষকেও প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়ে বলেছে, দু’দিনের মধ্যে দমদম সংশোধনাগার-সহ জেলার অন্য সংশোধনাগারগুলির বিচারাধীন বন্দিদের খতিয়ান পেশ করতে হবে। অ্যাডভোকেট জেনারেলকে প্রধান বিচারপতি বলেন, দীপক জোশীর আর্থিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে রাজ্য সরকার যেন তাঁকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে ভাবে।
নেপালি দূতাবাসের তরফে দাঁড়ানো আইনজীবী হীরক সিংহ বলেন, ‘‘দীপক জোশী যে তাঁর মায়ের কাছে পৌঁছেছেন, সংবাদপত্রে ছবি-সহ সেই খবর দেখে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ যেমন স্বস্তির কথা বলেছে, তেমনই কড়া বার্তা দিয়েছে রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষকে।’’ আর রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের তরফে আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ যে নির্দেশ দিয়েছেন, তাতে আরও অনেক দীপক জোশী গরাদের ভিতরের মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে চলেছেন।’’