সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া চলছে। প্রতীকী ছবি।
বেআইনি পার্কিংয়ের প্রতিবাদ করায় এক আইনজীবীকে হেনস্থার অভিযোগ উঠল টালিগঞ্জে। গত ১৭ মার্চের এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে রাজ্যের শাসকদলের এক সাংসদের লোকজনের বিরুদ্ধে। পুলিশের দাবি, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে টালিগঞ্জ থানায় এফআইআর হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া চলছে।
অভিযোগকারী আইনজীবী গৌতম ঘোষ অভিযোগপত্রে জানান, তিনি টালিগঞ্জ থানা এলাকার শরৎ চ্যাটার্জি রোডের বাসিন্দা। সত্যানন্দ রায় রোডে তাঁর কার্যালয়ের পাশে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে গাড়ির যন্ত্রাংশ বিক্রির ব্যবসা করেন সুরিন্দর চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি। গাড়ির সাজসজ্জার কাজও হয় সেখানে। ওই আইনজীবীর অভিযোগ, এ জন্য সুরিন্দর দোকানের সামনের ফুটপাত ব্যবহার করেন। ওই রাস্তা কলকাতা পুলিশের ‘নো পার্কিং জ়োন’। অথচ গাড়ি ফুটপাতে তুলে কাজ হয়।
গৌতমের কথায়, ‘‘১৬ ফুট রাস্তার অনেকটাই ফুটপাত। এ ভাবে গাড়ি রেখে ব্যবসা করায় পথচারীরা হাঁটার জায়গা পান না। তাই একাধিক বার পুলিশে প্রতিবাদ করেছি, লালবাজারেও অভিযোগ করেছি। পুলিশ ব্যবস্থা নিলেও কিছু দিন পরে দেখা যায়, ফুটপাতে গাড়ি রেখে কাজ চলছে।’’
আইনজীবীর দাবি, গত ১৫ মার্চ তিনি দেখেন, সাংসদের স্টিকার লাগানো একটি গাড়ি ওই ফুটপাতে রাখা। তিনি সেই গাড়ির চালককে এ ভাবে গাড়ি না রাখতে বলেন। গৌতমের দাবি, সাংসদের নাম শুনে তিনি বলেন, ‘‘এটা নো পার্কিং জ়োন জানার পরে নিশ্চয়ই ওই সাংসদ এমন কাজ করবেন না।’’ অভিযোগ, ১৭ মার্চ গৌতমকে তাঁর কার্যালয়ের সামনে ঘিরে ধরেন কয়েক জন। সাংসদের গাড়ি নিয়ে কেন এমন মন্তব্য করা হয়েছে বলে মারধরও করা হয়। গৌতমের কথায়, ‘‘গোটাটা সিসি ক্যামেরায় ধরা রয়েছে। মেরে আমার চোখ ফুলিয়ে দেওয়া হয়, গলার চেন ছিঁড়ে নেওয়া হয়। হেলমেট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। এম আর বাঙুর এবং টালিগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা হয়েছে।’’
যে সাংসদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ, তাঁর নাম অবশ্য অভিযোগপত্রে লেখেননি গৌতম। ওই সাংসদও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি। গৌতম বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি। আসল দোষ সুরিন্দরের।’’ সুরিন্দরের অভিযোগ, ‘‘এলাকায় খোঁজ করলেই জানা যাবে, ওই আইনজীবী কী ভাবে মামলার ভয় দেখিয়ে সকলকে উত্যক্ত করেন। আমার কাছে সে দিন সাংসদের গাড়ির কাজ করানো হচ্ছিল। কিন্তু সেটা নিয়ে কী হয়েছে, বলতে পারব না।’’