—প্রতীকী চিত্র।
স্কুলের পড়ুয়াদের পোশাক তৈরি করা বাবদ তাঁদের বকেয়া হয়েছে প্রায় আট লক্ষ টাকা। বছর ঘুরে গেলেও এখনও সেই টাকা পাননি জোকার এক ও দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার তিনটি ওয়ার্ডের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বহু সদস্য। ওই এলাকা কলকাতা পুরসভার আওতায় এসেছিল ২০১২ সালে। অভিযোগ, তাঁরা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলে বলা হচ্ছে আলিপুরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকের অফিসে যেতে। সেখানে গেলে ওই সদস্যদের শুনতে হচ্ছে, এই সমস্যার সমাধান করতে পারবে কলকাতা পুরসভা। তাঁরা যেন সেখানে যোগাযোগ করেন। ফলে, বকেয়া প্রায় আট লক্ষ টাকা পেতে এখন তাঁদের দুই জেলা অফিসে ছুটোছুটি করতে হচ্ছে। যদিও পুরসভার এক শীর্ষ কর্তার আশ্বাস, ‘‘ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা সদস্যেরা শীঘ্রই যাতে বকেয়া টাকা পান, তার ব্যবস্থা হচ্ছে।’’
জোকার এক ও দু’নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা বর্তমানে কলকাতা পুরসভার ১৪২, ১৪৩ ও ১৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের অধীনে। ওই তিনটি ওয়ার্ডে প্রায় ২০০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। তাদের সদস্যদের নাম নথিভুক্ত আছে পুরসভার সোশ্যাল সেক্টর বিভাগে। গত বছর একাধিক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা সদস্যেরা ওই এলাকার ১৭টি বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের পোশাক তৈরি করেছেন। এর জন্য তাঁরা বাজার থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। হিসেব মতো, পোশাক তৈরির খরচ বাবদ ওই সদস্যদের পুরসভার থেকে প্রায় আট লক্ষ টাকা পাওয়ার কথা। অবিলম্বে সেই টাকা পাওয়ার আর্জি জানিয়ে পুজোর আগে সোশ্যাল সেক্টর বিভাগের আধিকারিকদের শরণাপন্ন হয়েছিলেন গোষ্ঠীর সদস্য আরতি মাখাল, মণিকা বর, রত্না সিংহ পালেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘কখনও পুরসভা, কখনও স্থানীয় ব্লকের মাধ্যমে পোশাক তৈরির কাপড় সংগ্রহ করেছিলাম। ছেলেদের জামাপ্যান্ট, মেয়েদের সালোয়ার-কামিজ বানাতে বিভিন্ন স্কুলে মাপ নিতে গিয়েছি। পোশাক বানানোর জন্য সরকারি তরফে নির্দিষ্ট মূল্য ধার্য করা হয়েছিল।’’
মণিকা বলেন, ‘‘এক বছর আগে ৩০ জন সদস্য মিলে পোশাক তৈরি করেছিলাম। সেই টাকা এখনও না পাওয়ায় নতুন কাজ শুরুও করতে পারছি না।’’ আরতির কথায়, ‘‘অন্যের থেকে টাকা ধার করে পোশাক তৈরি করেছিলাম। সেই টাকা আদায় করতে নিত্যদিন পাওনাদারেরা আসছেন।’’
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার গ্রামীণ উন্নয়ন সেলের প্রকল্প অধিকর্তা দেবাহুতি ইন্দ্র বলেন, ‘‘ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যেরা যে সব স্কুলে পোশাক সরবরাহ করেছেন, সেগুলি জেলার ডিআই অফিসের অধীনে। এক দফতর থেকে অন্য দফতরে টাকা যেতে পদ্ধতিগত কিছু সমস্যা হচ্ছে। তবে ওই মহিলারা শীঘ্রই টাকা পাবেন।’’ মেয়র পারিষদ (সোশ্যাল সেক্টর) মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই সমস্যা মেটাতে মেয়র নিজে উদ্যোগী হয়েছেন। ওই মহিলাদের টাকা পেতে সমস্যা হবে না।’’