রবীন্দ্র সরোবর। —ফাইল চিত্র।
আমপান-আয়লার মতো ঝড়ের দাপটে রবীন্দ্র সরোবরে ধরাশায়ী হয়েছে বহু গাছ। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতেও উপড়ে পড়েছে কয়েকটি বড় গাছ। তাই সরোবর চত্বরে সবুজায়ন বাড়িয়ে পাখিদের আনাগোনা বাড়াতে ক্রাউড ফান্ডিং করে গাছ লাগালেন পাখিপ্রেমীরা। করঞ্জ, জামরুল, করমচা, হলুদ পলাশ, কাঞ্চন-সহ প্রায় ৫০টি গাছের চারা রবিবার সরোবর চত্বরে রোপণ করেন তাঁরা।
সরোবরে আসা পাখিদেখিয়েদের ২৫০ জনের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে (বায়োডাইভার্সিটি অব রবীন্দ্র সরোবর) আলোচনা করে স্থির হয়েছিল, নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে তাঁরা ১৫০টি গাছ লাগাবেন সরোবর চত্বরে। পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী ও পাখিপ্রেমী সুদীপ ঘোষ বলছেন, ‘‘৬৫ জনের চাঁদায় প্রায় ৪৫ হাজার টাকা ওঠে। তা দিয়েই প্রথম দফায় রবিবার ২৫ জন মিলে ৫০টি চারা রোপণ করেছি। এরা কেমন থাকে, তা দেখেই বাকি চারা কেনা ও লাগানো হবে।’’
সরোবর চত্বরে উৎসাহীদের নিয়ে ‘ট্রি-ওয়াক’ করানো, পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী দেবজিৎ মুখোপাধ্যায় জানান, ঘূর্ণিঝড়ের দাপট সহ্য করতে পারবে, এমন চারাই বাছা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘এমন গাছ লাগাচ্ছি, যা ঝড়ে মুখ থুবড়ে পড়বে না। সরোবরে গাছের বৈচিত্র বাড়লে কীটপতঙ্গ, প্রজাপতির সংখ্যাও বাড়বে। এখানে ১২০-১৩০ রকমের গাছ থাকলেও হলুদ পলাশ নেই, কাঞ্চনের সব প্রজাতি নেই। তা মাথায় রেখেই চারা কেনা হয়েছে।’’
এই উদ্যোগে তাঁরা পাশে পেয়েছেন কেএমডিএ-কে। ওই সংস্থার এক আধিকারিক জানান, সরোবর চত্বরে ন’হাজারেরও বেশি গাছ রয়েছে। তবে চার-পাঁচ বছরে ১৪০টিরও বেশি গাছ পড়েছে। শুধু আমপানেই পড়েছিল ১০০টিরও বেশি। কারণ, বহু গাছের মূল মাটির বেশি গভীরে যায় না। ফলে ঝড়ে বা টানা বৃষ্টিতে মাটি নরম হলে গাছ উপড়ে পড়ে। তাঁর কথায়, ‘‘সরোবর চত্বরে গাছেদের জ়োন রয়েছে। ভবিষ্যতে এই চারাগুলির কয়েকটিকে অন্য জ়োনে সরানো হতে পারে। তাতে ওঁদের আপত্তি নেই।’’